সাংবাদিকগণ সার্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সবকিছুতে ‘না’ বলা বিএনপি, যারা এ কল্যাণমূলক প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করছে আশা করি তারা ‘না’ রোগ থেকে মুক্তি পাবে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটিতে আপনাদের (বিএনপি নেতারা) কোনো ‘সাজেশন’ থাকলে বলুন। সেই পরিকল্পনা যখন প্রকাশ করা হবে সেখানে কোনো ভালো ‘সাজেশন’ থাকলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এরকম একটি ভালো উদ্যোগের কেন সমালোচনা করছেন? সবকিছুতেই না বলার যে বাতিক, সেটাই তাদেরকে পেয়ে বসেছে, তা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। আশা করবো তারা এই না বলা রোগ থেকে মুক্তি পাক।
সাংবাদিকরা মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে পারেন, যে মানুষটি স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় তাকেও সাংবাদিকরা স্বপ্ন দেখাতে পারে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েও সমাজে অবহেলিত, উপেক্ষিত মানুষকে নিয়ে লেখেন, আমি তাদেরকে ‘স্যালুট’ জানাই কারণ এ ধরনের রিপোর্ট দরকার। এ ধরনের রিপোর্ট সমাজকে পথ দেখায় এবং দায়িত্বশীলদের আরও দায়িত্ববান হতে তাগাদা দেয়।
গণমাধ্যমে আজকে যে অগ্রগতি সেটি এবং কোনো অসঙ্গতি থাকতে সেটিও তুলে ধরুন। আমাদের সরকার সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করে বলেন তথ্যমন্ত্রী।
গণমাধ্যম জগতে বিরাজমান কয়েক দশকের পুঞ্জিভূত বিশৃঙ্খলা দূর করে ধীরে ধীরে শৃঙ্খলা আনতে আমার চেষ্টায় অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেন সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাবল অপারেটররা টেলিভিশন মালিকের কাছে দাবি করত যে বেশি টাকা না দিলে সিরিয়াল যাবে পঞ্চাশে, টাকা দিলে সিরিয়াল যাবে পাঁচে। সেখানে সিরিয়াল ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এখন টেলিভিশন মালিকদের আর অপারেটরদের দারস্থ হতে হয় না। বিদেশি মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন চলে যাওয়া বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকেই মনে করেছে বিদেশি টিভি’র ক্লিনফিড বা বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার কখনওই সম্ভব না, সেটি আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
হাছান বলেন, সংবাদপত্রে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনেকে বাস্তবায়ন করেছে আবার অনেকেই করেন নাই। নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ব্যাপারে সাংবাদিক ইউনিয়ন সোচ্চার আছে। আমি মনে করি যে, সবার নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা উচিত। আমরা এ নিয়ে কাজ করবো।তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, তথ্য কমিশন গঠিত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন সাংবাদিকবান্ধব নেতা ছিলেন। আজ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সমস্ত সাংবাদিক সাহায্য পাচ্ছেন, অনুদান পাচ্ছে, এক্ষেত্রে কে কোন দলের কে কোন মতের সেটি দেখা হচ্ছে না। যারা সরকারের সমালোচনা করেন তারাও সাহায্য পাচ্ছেন। করোনাকালে দেশের সকল অঞ্চলের সাংবাদিকরা সহায়তা পেয়েছে। সাংবাদিকদের ছেলেমেয়েরাও যাতে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা পায় তার জন্য নীতিমালা হচ্ছে, সেই নীতিমালা খুব সহসা চূড়ান্ত হবে, জানান তিনি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু’র পরিচালনায় দ্যা ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিইউজে’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সূর্য প্রমুখ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট-বিসিটিআই জার্নালের বঙ্গবন্ধু সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সচিব মো. মকবুল হোসেন এবং বিসিটিআই’র প্রধান নির্বাহী মো. আবুল কালাম আজাদ। মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।