মাসুদুজ্জামান,লিটন, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: দেশে দ্বিতীয় দফায় মহামারি কোভিড-১৯ করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। লকডাউনে জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান গুলো খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও হাটফাজিলপুর বাজারের চিত্রগুলো দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো। করোনার মহামারী রোধে দেশব্যাপী চলছে সর্বাত্মক লকডাউন আর কঠোর বিধিনিষেধ। গতশনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর বাজার এলাকার চিত্র যেন সম্পূর্ণ উল্টো। হাটফাজিলপুর বাজারের বেশীরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা, মাক্স পরা ও মাক্সবিহীন ক্রেতা সমাগম পুরো বাজার। ভীড় দেখা গেছে, মাছ বাজার, কাঁচা বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানগুলোতেও।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা হাটফাজিলপুর বাজারে গত শনিবার সাপ্তাহিক হাটেরদিন বাজারে প্রবেশ করতেই খবর ছড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকগন দ্রæত বন্ধ করতে শুরু করেন। হাটফাজিলপুর বাজারে নানা অজুহাতে শত-শত মানুষ। মুখে নেই মাস্ক কারো কারো থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী ব্যবহার করছে না। সামাজিক দুরত্ব তো মানছেই না। কিছু কিছু ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেশীর ভাগই আংশিক নয়তো সম্পূর্ণ খোলা। এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে যেসব কঠোর শর্তাবলী রয়েছে তা রীতিমতো উপেক্ষিত। আর সাপ্তাহিক হাট-বাজার গুলো যেন জনস্রোতের অবস্থা;সামাজিক দুরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, পথ-ঘাট, ব্যবসা-বানিজ্য, চায়ের দোকান, হোটেল-রেস্তোরা, পাবলিক প্লেস কোথায় নেই মানুষের স্রোত ! তবে লকডাউন কার্যকর ও মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা এবং মাক্স পরিধানে সতর্ক রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা । আর সে কারনেই শৈলকুপা উপজেলাসহ হাটফাজিলপুর বাজারে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের তীব্র ঝাপটা ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করতে দিনের বেশিরভাগ সময় রাস্তায় ও হাট বাজারে কাটছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা’র । একারণে শৈলকুপা উপজেলাতে শতভাগ লকডাউন বাস্তবায়ন হচ্ছে,এছাড়াও বিভিন্ন হাটবাজারে তার নির্দেশে বসানো হয়েছে হাত ধোয়ার বেসিন সহ কল রাখার হয়েছে সেখানে হাতধোয়ার সাবান। লকডাউনে সহকারী কমিশনার(ভূমি)পার্থ প্রতিম শীলের নেতৃত্বে এবং শৈলকুপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও হাটফাজিলপুর ক্যাম্প আইসি মোঃ ফারুক হোসেনসহ পুলিশ সদস্যদের ব্যপক অবদান রয়েছে। ১৪ এপ্রিল বুধবার থেকে চলছে প্রশাসনের এই অভিযান। তারই অংশ হিসাবে গত শনিবার সকাল থেকে সন্ধা অবধি উপজেলার হাটফাজিলপুর বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় হ্যান্ডমাইকের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করেছেন ইউএনও কানিজ ফাতেমা লিজা । এসময় নির্ধারিত সময়ের বাইরে কাপড়ের দোকান খোলা রাখার দায়ে হাটফাজিলপুর বাজার এলাকায় দুই দোকানিকে ৫শত টাকা,২শতটাকা করে জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা । এ সময় হাটফাজিলপুর ক্যাম্প আইসি পুলিশের এসআই মোঃ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা সহযোগিতা করেন। এত কিছুর পরও মানুষের মাঝে ফিরছেনা সচেতনতা। সচেতন মানুষের মতে, মাক্স পরা ও মাক্সবিহীন মানুষের অবাধ বিচরণে মনে হচ্ছে যেন লকডাউন আনলক হয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, সরকার কতৃক ঘোষিত ১৮দফা নির্দেশনা নিয়ে ইতোমধ্যে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও যেখানে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য হচ্ছে, সেখানে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হচ্ছে। এসময় লকডাউন কার্যকর ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার প্রকোপ থেকে নিজেদের কে রক্ষার্থে সাধারণ মানুষকে সতর্ক ও সচেতন হওয়ার আহবানও জানান এ কর্মকর্তা। ১১নং আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে লকডাউন মোটামুটি কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হয়েছে। মেম্বারদের নেতৃত্বে ওয়ার্ড কমিটিগুলো কার্যকর করা হয়েছে। মানুষ ঘর থেকে কম বের হচ্ছেন। হাটফাজিলপুর বাজার সহ বিভিন্ন এলাকার চায়ের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে।’ গতশনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা’র সাথে হাটফাজিলপুর বাজারে লকডাউন কার্যকরে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ১১নং আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগনেতা মুক্তার আহমেদ মৃধা ও হাটফাজিলপুর বাজার কমিটির সভাপতি কুদ্দুস বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। মুক্তার আহমেদ মৃধা বলেন, বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেয়া নোভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের পক্ষ থেকে মাস্কসহ নানা সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। হাটফাজিলপুর বাজার সহ আবাইপুর ইউনিয়নে সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচার মাইকিং করা হয়েছে। সেটা ইউনিয়নের কমবেশি সবাই জেনে গেছে। মানুষ কম বের হচ্ছেন। তবে সাপ্তাহিক হাটের দিনে বাজারগুলোতে বেশ লোকসমাগম হচ্ছে। সন্ধ্যার পর আড্ডা বন্ধ করা হয়েছে। মানুষ কম বের হচ্ছেন।আমার এ ইউনিয়নে লকডাউন অনেকটা কার্যকর করা গেছে।