রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: রাতে ঘুমিয়ে পড়লে নারীদের নগ্ন, অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ এমনকি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকলে গায়ে হাত দিয়ে স্পর্শ করার ঘটনা ঘটেছে। ঈদের রাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের সাফখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে। তবে এখনো সেই যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, দেড় বছর ধরে গ্রামটিতে প্রতিরাতেই হাজির হত এক যুবক। নারীরা ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ঘুমন্ত অবস্থার বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও করতো সে। এমনকি জানালা দিয়ে শরীর স্পর্শ করা হত। কখনো পাটকাঠি দিয়ে নারীদের শরীরে খোঁচা দেওয়া হত।
গত ২২ এপ্রিল সাফখোলা গ্রামের ফেরদৌস নামে এক ব্যক্তির ঘরের জানালা দিয়ে মোবাইলে ছবি তোলার সময় তিনি লাল রঙয়ের আলো দেখতে পায়। পরে তিনি আঘাত করলে ওই যুবকের হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়। এরপর মোবাইল ঘেঁটে দেখা যায় পশ্চিম সাফখোলা ও আশুরহাট গ্রামের কমপক্ষে ১৫০ নারীর ঘুমন্ত অবস্থার বিভিন্ন সময়ে ধারণ করা আপত্তিকর ছবি।
এ ঘটনায় এলাকায় হৈচৈ পড়ে যাওয়ার পর থেকে এলাকাবাসীরা তাদের নিরাপত্তায় রাত জেগে পাহারা দিতে শুরু করেছে। প্রথম দিকে কেউ টের না পেলেও মাঝে মধ্যে দুই একটি ঘটনার খবর এলাকাবাসী পেত। তবে যে রাতে পাহারা দেওয়া হত সেই রাতে কোনো ভিডিও ধারণ করা হত না।
উপজেলার সাফখোলা গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস বলেন, ‘ইদের দিন রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি এবং রাত তিনটার দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখতে পাই আমার ঘরের জানালা দিয়ে এক যুবক মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করছে। তখন আমি তার হাতে আঘাত করি এবং তার হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়। এরপর মোবাইলে ধারণ করা এলাকার বিভিন্ন নারীদের নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবি দেখতে পাই। মোবাইলের মাধ্যমে দোষী যুবককে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।’
সাফখোলা গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমরা যদি নিরাপদে রাতে ঘরে শুয়ে না থাকতে পারি এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে। এভাবে রাতের অন্ধকারে মোবাইলে ছবি তোলা ঠিক না। আমরা ওই যুবকের শাস্তির দাবি জানাই।’
নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের বলেন, ‘সাফখোলা গ্রামটিতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে মেয়েরা ইচ্ছেমতো ঘুমিয়ে থাকে তাদের ছবি তোলা মোটেও ঠিক না। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার কেউ ঠিকমত রাতে ঘুমাতে পারছেনা। আমি শৈলকুপা থানাকে জানিয়েছি। এমন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি হওয়া উচিত।’
শৈলকুপা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি, ঘটনাটি খুবই আপত্তিজনক। অপরাধীকে খুঁজে আইনের আওতায় আনব। তবে এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।’