রকিবুল ইসলাম রুবেল, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নির্মিত লালমনিরহাটে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের (মুজিব পল্লী) ঘর বাতাসে তছনছ হয়ে পড়েছে। এমনকি ভেঙ্গে পড়ে বারান্দার পিলার। ফলে অনেক অসহায় পরিবার খোলা আকাশের নিচে ইফতার ও সাহরী খাওয়াসহ জীবন যাপন করছেন।
শনিবার ভোরে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের সময় সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ আশ্রয়ণ প্রকল্পের (মুজিব পল্লী) এলাকায় হালিমা খাতুনের ঘরের চাল উড়ে যায় এবং ভেঙ্গে পরে বারান্দার পিলার।
হালিমা খাতুন (৩২) বলেন, তার ঘরটিই শুধু ক্ষতি হয়েছে। তার কোনও সামর্থ্য নেই এটি মেরামত করার। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় তার ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
শনিবার বিকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রকৌশলী শাহ ওবায়দুর রহমান ও ইউএনও অফিসের দুই কর্মচারী ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন করলেও তারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী আমিনুল ইসলাম (৩৮) বলেন, ঘর ও জমি তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু, রাস্তা ও নলকূপের ব্যবস্থা না থাকায় যাদের দেওয়া হয়েছে তারা এখনও বসবাস শুরু করতে পারেননি। তার অভিযোগ, ঘরগুলো নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেও কোন ফল হয়নি।ফলে অনেক অসহায় পরিবার খোলা আকাশের নিচে ইফতার ও সিয়ারিসহ জীবন যাপন করছেন।
‘আলমগীর হোসেন নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের এক কর্মচারী এখানে কাজের দেখাশুনা করেছিলেন এবং তার খুশিমতো কাজ করেছিলেন,’ বলে জানা যায়।
তবে, ইউএনও কার্যালয়ের সার্টিফিকেট সহকারী আলমগীর হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের দেখাশুনা করেননি।
তিনি জানান, লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ১৫০টি ভূমিহীন পরিবারের কাছে ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আরও ১৫০টি ঘর নির্মাণ চলমান আছে।
ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়ে মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, বসবাস শুরুর আগেই বাতাসে ঘরের চাল উড়ে যাওয়া আর পিলার ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা হতবাক। তবে কাজের মান নিয়ে প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে তিনি জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের বিষয়টি সরাসরি ইউএনও নিয়ন্ত্রণ করেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘হালিমা খাতুনের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরটি পুনরায় মেরামত করে দেওয়া হবে।’ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি তার।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘরটি মেরামত করে দেওয়া হবে।এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।