রকিবুল ইসলাম রুবেল, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ বছরখানেক আগেও সবই ঠিকঠাক চলছিল। ছেলে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করে, এক মেয়ে তাকেও বিয়ে দেওয়ার ১১বছর পার হয়ে গেছে। অভাব-অনটনের সংসার হলেও আনন্দেই দিন কাটতো লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের হিরামানিক গ্রামের মৃত বক্তার আলীর ছেলে ৫৫ বছর বয়সী শামছুল হকের।
প্রায় মাস দশেক আগে হঠাৎ শামছুরের গলার একাংশে ছোট ছোট বিষফোঁড়া সদৃশ কিছু লক্ষ করে। কিন্তু সেটা নাকি ভিশন যন্ত্রণাদায়ক ছিল। সইতে না পেড়ে স্থানীয় ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। চলে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারের হাতুড়ে চিকিৎসা। কিন্তু দিন যতোই গড়ায় ছামসুরের অবস্থার অবনতি ঘটে।
সামান্য জমি বন্ধক নিয়ে চাষাবাদ ও পরের ক্ষেতে দিনমজুর দিয়ে সংসারটা চালিয়ে আসছিলো সে। জীবন বাঁচাতে বন্ধকী জমিটুকু ছেড়ে দিয়ে টাকা ফেরত নিয়ে চলতে থাকে চিকিৎসা, কিন্তু তখনো শামছুল জানতেন না তার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণ ব্যাধি ক্যানসার।
লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুরের বিভিন্ন ডাক্তার দেখে প্রায় পাঁচ মাস আগে সনাক্ত হয়েছে সে ক্যানসারে আক্রান্ত।
শামছুল হকের এখন উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন কিন্তু তিন শতক ভিটা ছাড়া তার যে আর কিছুই নাই। একমাত্র ছেলে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরী করলেও লকডাউনের কারনে সে নিজেই বিপাকে।
ক্যানসার সনাক্ত হওয়ার আগেও অসুস্থ শরীর নিয়ে শামছুল মনের জোরেই পরের জমিতে কাজ করে সংসার চালিয়েছে। কিন্তু ক্যানসার নামক মরণ ব্যাধি তার শরিরে বাসা বেধেছে যানতে পেয়ে অনেকটা ভেঙ্গে পরেছে সে। চোখ দুটো ফুলে যাওয়ায় সে দেখতেতো পারছেইনা, পারছে না একটু কাঁদতে।
ক্যানসার আক্রান্ত শামছুল বলেন, আমিতো এখোন কাঁদতেও পারিনা। কয়দিন আগেও অসুস্থ শরীর নিয়ে মাঠে কাজ করে সংসারের সমস্ত খরচ চালাইছি।
আমি আবারও দিনমজুর দিয়ে সংসারটা চালাবো, দেখেন না আমার জন্য কিছু করা যায় নাকি!
শামছুলের পরিবার ও প্রতিবেশীরা বলেন, ডাক্তার বলেছে উন্নত চিকিৎসা করলে সে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু ব্যয়বহুল হওয়ায় তার চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছেনা। সরকার ও বৃত্তবানরা চাইলে হয়তো শামছুর আবারো সুস্থ হয়ে ক্ষেতে খামারে কাজ করে তার সংসার চালাতে পারবে।
বর্তমানে সরকারি বেসরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় আছে ঐ পরিবারটি।
স্থানিয়রা বলছেন, আমরা যারযার জায়গা থেকে চেষ্টা করছি। যা চাহিদার তুলনায় একেবারই অপ্রতুল। ক্যানসার আক্রান্ত শামলের প্রতি নিশ্চয় সরকার ও সমাজের বৃত্তবানরা সহায়ক হবেন।