রকিবুল ইসলাম রুবেল, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট জেলায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের উদাসিনতায় সর্বত্রই ভেজাল ঔষধে ছড়াছড়ির অভিযোগ উঠেছে।
এ জন্য জেলার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরটির সুপার হাফিজুর রহমানকে দুষছেন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার ৫ টি উপজেলায় ( লালমনিরহাট সদর,আদিতমারী,কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম) প্রায় ২ হাজার ঔষধের দোকান রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১১ শত ঔষধ দোকানের ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও বাকী দোকান গুলো সবই অবৈধ ভাবে কমিশন ভিত্তিতে চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জেলার আনাচে কানাচে প্রায় ঔষুধের দোকানে ও গালামাল দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন বিহীন ভেজাল ঔষুধ। বাহারি নামে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সুন্দর লেবেল লাগিয়ে বিক্রয় করা হচ্চে যৌন উত্তেযক এই সব ঔষধ।
বাহারী নামে বাজারে বিক্রয় হচ্ছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদন বিহীন ওয়ান ফ্রুট সিরাপ,জিনসা,টাচ্ ফ্রুট সিরাপ ও ভিগোসা নামক যৌন উত্তেযক ঔষুধ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডাঃ বলেন, অনুমোদন বিহীন ঔষধ মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যার প্রভাবে শরিরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়।
প্রতিদিন উঠতি বয়সের ছেলে, রিক্সা চালক,ভ্যান চালক, অসচেতন নাগরিক এই সব ঔষধ ক্রয় করতে দোকান গুলোতে ভির করছে।
তালুক খুটামারা বত্রিশ হাজরীর ঈদ গাহ মাট সংলগ্ন বাবু, শহীদ সাজাহান কলোনির বাদল ও রেল বাজার এলাকার শাহ আলম এই তিনজন সিন্ডিকেট করে পুরো জেলায় গালামাল ও ঔষুধের দোকানে এই অবৈধ সিরাপ সরবরাহ করছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্বিত করেছে।
শহীদ শাহজাহান কলোনির বাদল এর সাথে দৈনিক দেশ সেবার প্রতিনিধি পরিচয় গোপন করে গালামাল দোকান্দার সেজে ফোন করে ওয়ান ফ্রুট সিরাপ, টাচ্ ফ্রুট সিরাপ, জিনসা ও ভিগোসা সিরাপ ক্রয় করতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে ওয়ান ও টাচ্ ফ্রুট সিরাপ আছে। আপনি চাইলে আপনার দোকানে পৌছে দিব( কল রেকর্ড সংগ্রহিত)।
বাংলাদেশ কেমিষ্ট এ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল হামিদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ড্রাগ সুপার ঠিক মত অফিস করেন না। এই কারনে লালমনিরহাট জেলায় এই ধরনের ইউনানি ঔষধ ছেয়ে গেছে। সবই হয়েছে ড্রাগ সুপার আর সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদাসিনতায়।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় বলেন, অনুমোদন বিহীন যে কোন ঔষধ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তথ্য পেলে আমরা ব্যাবস্থা নিব।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলার ড্রাগ সুপার হাফিজুর রহমানের সাথে কথা বলতে গত ২১ জুন তার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর চাইলে অফিসটির অফিস সহায়ক ইউনুস নম্বর না দিয়ে খারাপ ব্যবহার করেন।
পরে ২২ জুন সকালে লালমনিরহাট ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গুগল সার্চ করে অফিসের সুপারের নাম্বার পাওয়া যায়। সেই নাম্বারে কল করে তার কাছে গতকালের অফিস সহায়কের খারাপ ব্যবহারের বিষয় এবং তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি মাফ চেয়ে নেন। এবং বলেন, আমি ২ মাস হয় এখানে জয়েন করেছি। সপ্তাহে ৭ দিনের ৪ দিন কাজ করার সুযোগ পাই তাই ঠিকমত মনিটরিং করতে পারিনা। তবে আপনার সহযোগিতা করলে আমি ভেজাল ঔষুধ এর রিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
আর জেলায় অবৈধ ফার্মসির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,আমি অডিট শুরু করেছি। তাদেরকে ১ বছর সময় দিচ্ছি। কিন্তু কমিশন সিস্টেমের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, কোন ফার্মেসির মালিক বলতে পারবে না আমি কারো কাছে টাকা নিয়েছি। তবে বাংলাদেশ কেমিষ্ট এ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল হামিদ এর অভিযোগ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
বিজ্ঞ মহল মনে করে এখনি এই ভেজাল ঔষধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে উঠতি বয়সের ছেলেরাসহ লালমনিরহাটে মানুষের বড় ধরনের ক্ষতির সমভাবনা রয়েছে।