চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে ঐতিহাসিক সমঝোতার রেশ না কাটতেই এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের আভাস দিল ইরান। খবর আল জাজিরার।রোববার (১২ মার্চ) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর দাবি করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। একইসঙ্গে চুক্তির আওতায় শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের ইঙ্গিত দেন তিনি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েকদিনের চেষ্টায় আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমি মনে করি যে আমরা স্বল্পমেয়াদে বন্দি বিনিময় করতে পারব। গেল বছরের মার্চে পরোক্ষ আলোচনার সময় তেহরান-ওয়াশিংটন একটি চুক্তি হয়েছিল। আমার মনে হয় চুক্তিটি বাস্তবায়নের সময় এসে গেছে। আমরা আমাদের দিক থেকে পুরোপুরি প্রস্তুত।’
তবে, ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন বক্তব্য পুরোপুরি অস্বীকার করে একে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। তেহরানের সঙ্গে বন্দি বিনিময় সংক্রান্ত কোন চুক্তিতে পৌঁছানোর কথাও অস্বীকার করেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক মুখপাত্র।
এমন এক সময়ে ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে মন্তব্য করলেন, যখন তার ডেপুটি আলি বাঘেরি কানি ওমান ভ্রমণ করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দি বিনিময় আলোচনায় তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে মাস্কাট।
এর আগে, গেল অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানের কারাগারে আটক ইরানি-আমেরিকান নাগরিক ৮৫ বছর বয়সী বাকের নামাজিকে মুক্তি দেয় তেহরান। স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কথা বিবেচনা করে তাকে মুক্তি দেয়া হয় বলেও সেসময় ইরানি প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
যদিও, একই অভিযোগে এখনও ইরানের কারাগারে বন্দি রয়েছেন তার ছেলে সিয়ামাক নামাজি।
সম্প্রতি তেহরানের কারাগারের ভেতর থেকে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের মুক্তি নিশ্চিত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অনুরোধ করেন তিনি। একইসঙ্গে, কারাগারে আটক আরও দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তির দাবিও জানান নামাজি।
বন্দি বিনিময় এবং পারমাণবিক চুক্তি-এই দুই ইস্যুতেই বিলম্বের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে ইরান। যদিও, এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যা করে পারমাণবিক আলোচনা বর্তমানে ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকার নয় বলে মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন।
একইসঙ্গে, তেহরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগও করে আসছে বাইডেন প্রশাসন। এছাড়াও, গেল সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া ইরানজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ তেহরানের ভূমিকার কঠোর তীব্র নিন্দাও জানায় ওয়াশিংটন।