শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঝিনাইদহে কোটা সংস্কারকারিদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,গুলি বর্ষণ, পুলিশসহ আহত-৪০, আটক-২ সারা দেশে নিহতের সংখ্যা ১৩ স্বাচিপ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ মামুন, সম্পাদক ডাঃ কাওসার শিবির কর্মী-ছাত্রদল এবং বহিরাগতরা ঢাবির হলে তাণ্ডব চালিয়েছে-মোজাম্মেল হক সারা বাংলা র ৮৮ এর চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীপালন সারা বাংলা’র ৮৮ মাদারীপুর জেলা প্যানেলের উদ্যোগে চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীপালন ঝিনাইদহে কোটা বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত-২০ রংপুরে পুলিশের গুলিতে কোটা আন্দোলনকারী আবু সাঈদ নিহত চীন-রাশিয়া সামরিক মহড়া ছাত্র নিহতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অসত্য: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

মুক্তিবাহিনীর আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে পুড়িয়ে দেওয়া সেই বাড়ী

মোঃ শাহানুর আলম, স্টাফ রিপোর্টার
Update : রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৫৫ অপরাহ্ন

মোঃ শাহানুর আলম, স্টাফ রিপোর্টার: সময় চলে যায়, মানুষ বদলে যায়, কিছু স্মৃতি, কিছু কথা, কিছু ঘটনা ইতিহাস হয়ে রয়ে যায়, কিন্তু সব ঘটনা কি ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়? মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসে কত ঘটনায় ঘটেছে তার কটায় বা লেখা আছে। শহরের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা ছাড়া ইাতহাসে অনেক কিছুই স্থান পায়না। কিন্তু যাদের সামনে ঘটে তারা কখনো ভুলে যেতে পারে না।
ঝিনাইদহের অজ পাড়াগা সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের পাবর্তীপুর গ্রাম। প্রায় ২কি.মি পায়ে হাটা পথ পেরিয়ে হাজী আসকর আলীর বাড়ী, এই বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা বিশ্রাম নিতো সময় কাটাত। একদিন হঠাৎ আষাঢ়ের নির্ঝর দুপুরে (ইংরেজী জুলাই মাস) বাড়িটি ঘিরে ফেলে পাকিস্তানি সেনারা সাথে ছিল এদেশীয় কিছু দোষর আলবদর রাজাকার। তখন সেই বাড়িতে অবস্থান করছিল মুক্তিযুদ্ধির ৮নং সেক্টরের আঞ্চলিক কমান্ডার দুদু মিয়া সরকার, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু তাহের, ইলাহী বক্্র, মুহাঃ সুলতান আহম্মেদ, সিদ্দিকুর রহমান, তহুরুল ইসলাম, মোঃ সাহেব আলী, মফিজ উদ্দীন ময়ফল, মোঃ সামছুল হক ও বাবুর আলী মন্ডলসহ ১৪/১৫জন মুক্তি বাহীনি। তারা কোন ভাবে টের পেয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা তাদের ঘিরে ফেলেছে, তখন যে যার মতো করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বাড়ির পেছনের বিলে গিয়ে আত্মরক্ষা করে। ভাগ্যের জোরে তারা বেঁচে গেলেও পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাড়িটি। বাড়ি পুড়িয়ে পাকিস্তানিদের সাথে উল্লাস করতে থাকে এদেশের ওই আলবদররা। এমন করে স্মৃতিময় দিন গুলোর কথা বলতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের। আসকর আলী’র ৩ ছেলের মধ্যে মেজ ছেলে পাকিস্তান আর্মিতে ছিলেন। তিনি ছিলেন সে দেশের কারাগারে বন্ধি। বাকি ২ ছেলে, ছেলের বউ বাঁচ্চদের নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় আসকর আলী আর দীঘদিন তারা বাড়ী ফিরতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে আবার বাড়ী ফেরেন তারা। তৎকালীন আঞ্চলিক কমান্ডার বর্তমান অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ দুদু মিয়া সরকার জানান, আমরা প্রতিদিন অপারেশন শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে খাবারের জন্য এবং বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিলের ধারে নির্জন পল্লীতে হাজী আসকর আলী’র বাড়িতে যেতাম এবং নিরাপদ মনে করে অবস্থান করতাম। সে দিন ছিল আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি একটি তারিখ স্থানীয় রাজাকার পার্বতিপুর গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকি ও ভুটিয়ারগাতির আব্দুল হাকিমসহ আরও দু এক জনের নেতৃত্বে একদল পাকিস্তানি সেনা বাহিনী এই বাড়িটি ঘিরে ফেলে, আমরা তাদের আগমন টের পেরে অস্ত্র পাতি ফেলে বাড়ির পিছনের বিলে ঝাপ দিই। বাড়িতে বাচ্চা এবং মহিলাদের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছিল। সে দিন আমরা সবাই যে যার মত জানে বেঁচে গেলেও ওই বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এভাবে স্থানীয় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ইলাহী বক্্র, মুহাঃ সুলতান আহম্মেদ, সিদ্দিকুর রহমান তাদের স্মৃতির বর্ননা দেন। হাজী আসকর আলীর পুড়িয়ে দেওয়া সেই বাড়ির কোন স্মৃতিই আজ অবশিষ্ট নেই। স্থানীয় মুক্তযোদ্ধা কমান্ড ও এলাকার মুরব্বীরা হাজী আসকর আলীকে বিশেষ অবদানের জন্য মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দান এবং স্মৃতিময় সেই বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের ক্ষতিগ্রস্থ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত ও সরকারী ভাবে সংরক্ষনের দাবি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host