রকিবুল ইসলাম রুবেল, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ধানের বীজ তলা নষ্টে বাধা দেয়ায় ফুলেরা বেগম (৪৫) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধূকে বিবস্ত্র করে ধারালো ছুড়ি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
আহত ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। পরে রাতেই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় রফিকুল ইসলাম রফিক মিয়াকে প্রধান আসামী করে আরও ৫ জনের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস এলাকার মৃত আ: কাদেরের ছেলে। আহত ওই গৃহবধূ উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত তোতা মন্ডলের ছেলে আ: লতিফের স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস এলাকার আ: লতিফের স্বনামীয় কবলা খরিদা ও খারিজকৃত এবং নিজ ভোগ দখলীয় জমি নিয়ে পূর্বে থেকে অভিযুক্তদের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। এর আগে এ নিয়ে গত (৬ ফেব্রুয়ারী) থানায় জিডিও করেন আ: লতিফ।
পরে এরই মধ্যে চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষ করেন আ: লতিফ। ভুট্টা ঘরেও তুলেন। ভুট্টা তুলে গত (১৬ এপ্রিল) ওই জমিতে আবারো ধানের বীজ তলা করেন। এদিকে পরদিন ১৭ এপ্রিল বিকেলে অভিযুক্তরা বাশের লাঠি, লোহার রড, চুড়ি নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে জমিতে প্রবেশ করে বীজ তলা নষ্ট করতে থাকে।
এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় আ: লতিফের স্ত্রী ফুলেরা বেগম বাধা দিতে যায়। বাধা দিতে গেলে অভিযুক্ত অতর্কিত ভাবে ফুলেরা বেগমের উপর চড়াও হয়ে চুলির মুটি দরে বিবস্ত্র করে মারধর শুরু করে। অতপর ধারালো ছুরি দিয়ে কোপালে ফুলেরা বেগমের হাতে লেগে কেটে গিয়ে গুরুত্বর জখম হয়।
এ সময় ফুলেরার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায় এবং ফুলেরাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
রবিবার সরজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ফুলেরা বেগমের সারা শরীরে মারধরে জখম। ছুড়ি দিয়ে কোপানো বাম হাতে চারটি শেলাই দিয়ে ব্যন্ডেজ করা হয়েছে। এ সময় তার স্বামী লতিফের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই জমি আমার নিজ ভোগ দখলীয়। এ নিয়ে থানায় মামলা হলে আদালতের মাধ্যমে আমাি থাকে। আমি আবাদ করেছি। ধান বীজ তলা করেছি। কিন্ত আমি বাড়িতে না থাকায় তারা বেশ কয়েকজন জোর পূর্বক জমি দখলের চেষ্টা করেন। এ সময় আমার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে বিবস্ত্র করে মারধার করে। এমনকি ছুড়ি দিয়ে হাতে কুপিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক মিয়া বলেন, ওরা যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট। আমি বা আমরা কাউকে মারি নি। উল্টো ওরাই আমাদের মারধর করেছে। ওটা আমার বাবার নামীয় জমি। সেটার ভাগ চেয়েছি মাত্র।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।