অল্প বয়সে বিয়ে হয় হাজেরা বিবির। বিয়ের কিছু দিন পরই স্বামী নুরুদ্দিন তাকে ছেড়ে চলে যায়। মনের দু:খ কষ্টে আর কোনোদিন সংসার বাঁধেননি কারো সঙ্গে।হাজেরা বিবির বয়সর এখন৭৩ বছর। বয়সের ভারে কোন কাজ করতে পারে না। পেটের দায়ে মানুষের কাছে হাত পেতে জীবন চালাচ্ছে হাজেরা বিবি।
বহুদিন ধরে নিঃসন্তান হাজেরা বিবি বসবাস করছেন রেলস্টেশনের একটি বস্তিতে। কিন্তু কখনো হয়নি তার স্থায়ী ঠিকানা ।আশ্রয়ের জন্য যেতে হয়েছে বিভিন্ন মানুষের কাছে। কিন্তু মানুষজন তাড়িয়ে দেয় তাকে। এখন তিনি শহরের বদরপুরের তেল পাম্পের পাঁশে একটি ঝুপড়ি ঘরে কোনো রকম মাথা গুঁজে থাকেন। মাঝে মাঝে রাত কাটে পথে কিংবা প্রান্তরে।বৃদ্ধা হাজের বিবি, ‘আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘বাবা পৃথিবীতে আমার কেউ নাই। বড় হতভাগা আমি। দু’বছর আগে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে কাজ-কর্ম করে কোনোমতে চলে যেত। এখন আর কাজ কর্ম কনতে পারি না, তাইতো কেউ কাজে নেয় না । তাইতো বাঁচার জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত পেতে খাই। এখন আমি ভালো করে হাঁটতে পারি না। তবুও পেটের জন্য সকাল বেলা খাদ্যের সন্ধানে বেড়িয়ে পরি। পথে জিরিয়ে জিরিয়ে লাঠি ভর দিয়ে মানুষের দুয়ারে গিয়ে হাত পাতি।’
হাজেরা বিবি আক্ষেপ করে বলেন, ‘শুনেছি- শেখ হাচিনা সরকার গরিব মানুষদের কত কিছু দেয়! আমি তো জীবনে কিছুই পেলাম না। কত মানুষের কাছে গেছি। সবাই শুধু কথাই দেয়, কথা দিয়ে কেউ আর কথা রাখে না।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যে, যারা গৃহহীন, ভূমিহীন ও ছিন্নমূল তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে ফরিদপুর সদর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ছিন্নমূল মানুষদের জন্য ঘরের বরাদ্দ দিচ্ছি। আমরা খাস জমি প্রাপ্তিসাপেক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়নে তা নির্মাণ করছি।
ইউএনও আরো বলেন, আমাদের উপজেলায় উপকারভোগীদের যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স কমিটি আছে। আমরা এর আগেও যে বরাদ্দ আসছে তখন আমাদের অনুকূলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন পোর্টালে এবং বিভিন্ন জায়গায় বলেছিলাম, কারো যদি কেউ এ রকম অসহায় ছিন্নমূল (হাজেরা বিবি) সন্ধানে থেকে থাকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।