পিরোজপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের উপচে পড়া ভীর রয়েছে চোখে পড়ার মত। নেই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পা ফেলার জায়গা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড না থাকায় অনেকেই মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। বর্তমানে জেলা হাসপাতালে ১৩৪ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। বিগত এক সপ্তাহে জেলা হাসপাতালে ৫১০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। তবে রোগীর জন্য বেডের সংখ্যা কম থাকার ফলে অনেকেই ভোগান্তি মধ্যে মেঝেত শুয়েই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
১৯৮২ সালে পিরোজপুর আধুনিক হাসপাতাল নামে ৫০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরুর পরে পর্যায়ক্রমে ১০০ শয্যা এবং সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাস থেকে পিরোজপুর সদর হাসপাতাল এর পরিবর্তে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে রুপান্তর করা হয় সাথে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় রুপান্তরের ঘোষনা দেয়া হয়। বর্তমানে জেলা হাসপাতালের কাজ নির্মনাধীন থাকলেও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংঙ্কট রয়েছে। নাম মাত্র কিছু বেড দিয়েই চলছে জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড এর কার্যক্রম। রোগীর সংখ্যা একটু বৃদ্ধি পেলেই দেখা দেয় বেড সংঙ্কট ফলে বাধ্য হয়েই রোগীদের থাকতে হয় মেঝেতে। এয়াড়াও পিরোজপুর জেলা ৭ টি উপজেলায় ৭ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্স থাকলেও কোন উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে নেই ডায়রিয়া ওয়ার্ড ফলে প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন সময়ে এভাবেই চাপ পড়ে জেলা হাসপাতালে।
চলতি বছরে করোনা মহারারির কারনে জেলা হাসপতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড, গাইনী ওয়ার্ড, আইসলিসন সহ প্রায় সকল ওয়ার্ডেই রোগীদের চাপে কানায় কানায় পূর্ণ রয়েছে। ফলে অনিকটাই অবহেলা ও ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন ডায়রিয়া রোগারা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগেরর মতে, গ্রীষ্মের তাপদাহ বেড়েই চলছে শুষ্ক ও রুক্ষতার ফলে বেড়ে যাচ্ছে পানিবাহিত রোগ। ফলে অধিকাংশ মানুষই বর্তমানে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিসসহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়াও বর্তমানে নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ের পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই পানি পানের ফলে এ জেলা উপজেলার অধিকাংশ লোক উচ্চরক্তচাপে ভোগে। সাধারণত আমাদের হাসপাতালে আগত প্রায় ২৫ শতাংশ রোগীই উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত থাকেন। এসব কারনেই জেলা হাসপাতালে বেশি পরিমানে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে।
রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, ভোগান্তির আর এক নাম জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এখানে নেই পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা। রোগীই বেড পাচ্ছে না তারপরে প্রত্যেক রোগীর সাথেই রয়েছে তাদেও স্বজনরা। ফলে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেছেতে পর্যন্ত পা রাখার জায়গা নেই।
অনেক রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করে বলেন, করোনা মহামারীর কারনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে তেমন নজরদারী নেই হাসপাতাল কতৃপক্ষের। রয়েছে চিকিৎসক সংঙ্কটও। ফলে অনেক রোগী ও তাদেও স্বজনরা।
জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফ হাসান জানান, বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে অনেক বেশি ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি রয়েছে। আমাদেও যে পরিমান বেড রয়েছে তার চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি ফলে বাধ্য হয়ে মেঝেতে বেড করে দিতে হয়েছে। তবে এস রোগীরা তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা পচ্ছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা কওে যাচ্ছি।
সিভিল সার্জন হাসনাত ইফসুফ জাকী জানান, বর্তমানে জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ রয়েছে। বিগত সপ্তাহ থেকেই ডায়রিয়া রোগীদের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমরা রোগীদের ঠিকমত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ঔষদের কোন ঘাটতি নেই। তবে প্রচন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ডায়রিয়ার প্রভাব বেশি দেখা দিয়েছে। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত খাবার সেলাইন সহ ঔষধ রয়েছে যেটা সার্বক্ষাানক রোগীদেও দেয়া হচ্ছে।