পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। কিছুদিন আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতির পদ হারানো মঞ্জু পদ্মা নদী পারাপার নিয়ে নানা স্মৃতিচারণ করেন এই স্ট্যাটাসে। পাশাপাশি এ সেতু নির্মাণে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে গত ১৮ মে পদ্মা সেতুর কয়েকটি ছবি আর নিজেরও কিছু ছবি সম্বলিত স্ট্যাটাসটি দেওয়ার পর তা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা সমালোচনা। ফেসবুকে তার স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্ট বক্সে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি, খুলনার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা মত দিয়েছেন। অনেকেই তার স্ট্যাটাসের প্রশংসা করছেন। আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক আদর্শের জায়গা থেকে স্ট্যাটাসের সমালোচনা করেছেন।
সময় সংবাদের পাঠকদের উদ্দেশে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘একমাস ৭দিনপর হারিয়ে যাবে আমাদের চিরচেনা পথের অনেক কিছু
স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবে ঢাকা- খুলনা মহাসড়কের পদ্মা নদী পারাপারের মাওয়া- কাঠালবাড়ী ঘাট। উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ২৬ জুন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশার পদ্মা ব্রিজ। এরপর মানুষের স্মৃতিতে থাকবে মাওয়া-কাঠালবাড়ী ফেরী লঞ্চ ও স্পীডবোটে পারাপারের ৩০ বছরের স্মৃতি। গল্প হয়ে থাকবে আমাদের দুঃখ, সুখ, বেদনার ও তিক্ত অভিজ্ঞতার নানান কাহিনী, ঘুরে ফিরে আসবে আমাদের সামনে এবং আমরা বলব আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ওইতো ওখান দিয়েই আমরা পার হতাম প্রমত্তা, পদ্মা নদী।
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা। কখনও ঘন কুয়াশা কখনও প্রচণ্ড খরতাপে কখনও ঝড় বৃষ্টিস্নাত রাতে ঝুঁকিপূর্ণ’ পারাপার হলেও একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল, যাত্রায় গরম গরম ডিম-পরটা, সিদ্ধ ডিম, ঝালমুড়ি, চা গরম, ফেরিঘাটে অথবা লঞ্চে ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খাওয়া সব হারিয়ে যাবে এই ভেবে আজ পদ্মা পার হবার সময় মনটা মাঝে মাঝে খারাপ লাগছিল। তার পরেও ভাবনায় আসে আমাদের পদ্মা ব্রীজ, এক্সপ্রেসওয়ে ও ভাঙ্গা ফ্লাইওভার প্রাপ্তিতে আমরা সৌভাগ্যবান, দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে।
আল্লার প্রতি কৃতজ্ঞতা, আল্লাহ মহান।’
তার এ স্ট্যাটাসের নিচে কামরুল আহসান নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘দারুণ অভিব্যক্তি। চমৎকারভাবে বাস্তবতার উপস্থাপনা। নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গিতে পদ্মার এপাড়ের উন্নয়নের চেতনা আপনাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’
বিপ্লব খান নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আমার নানা মাঝে মাঝে গল্প করে বলতেন মঞ্জু ভাইয়ের পূর্ব পুরুষেরা এবং বর্তমানে অনেকেই মাদারীপুরে আওয়ামী লীগ করতেন বা করেন। এ দেশের দরিদ্র মানুষের রক্তচোষা টাকায় তৈরি সাকোর ছবি ও দুইদিন আগে যে নদীতে আপনার সাবেক নেত্রীকে (এই পোষ্টের পর আপনি নিজেকে বিএনপির লোক দাবি করতে পারেন না) চুবাতে চেয়েছে, সেই নদীর ছবি দিয়ে পূর্ব পুরুষের স্মৃতি আওড়াচ্ছেন। হায় পদ আর নির্বাচন ছোট/বড় সবার চরিত্র নষ্ট করে দেয়।’
শেখ আমিন নামে আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘জোড়া তালি দিয়ে বানালেয় মজবুত হয়েছে মনে হয়, ভরসা করে সবাইকে নিয়ে উঠতে পারিস।’
উল্লেখ্য, এক যুগেরও বেমি সময় খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তবে গত বছর ডিসেম্বর মাসে তাকে এই পদ থেকে অব্যাহতি দেয় বিএনপি। এর কিছুদিন পর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নজরুল ইসলাম মঞ্জু ২০০৮ সালে খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।