নিশি
-পলাশ দাশ
নিকষ আঁধার কালো
বলে—
আমার এ রাতের শরীরে
বহ্নিশিখা রাখো জ্বেলে,
কখনো গহীনে-গাঢ়
বিরহের কুন্ডলী
কেরোসিনের মশালের
মতো উঠে জ্বলি।
কখনো বাঁশির সুরে বিমূর্ত
সে বিজন রাত,
হাসিমুখে উদ্বেলিত
প্রকাণ্ড তৃপ্ত চাঁদ,,,
অযুত তারায় অঙ্কিত
আকাশ সামিয়ানা
মৌন স্বপ্ন-লক্ষ্মীপেঁচা
ঝাপটায় ডানা
পিয়ালে শালবনে
তমালের ডালে
শত আশায় অপলক দৃষ্টি
মেলে।
দল বেঁধে দীপ জ্বালাতে
জোনাকি
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রহস্যের
ইন্দ্রজালে আগলে রাখি।
নিকষ আঁধার কালো
বলে—
এ রাতের শরীরে
বহ্নিশিখা রাখো জ্বেলে।
খুঁজে মরো মায়াদন্ডে
পলে পলে,
কল্পপথে যায় চলে
অগণন যাত্রিকের প্রাণ।
করো না কি নিজ নিজ
আত্মার সন্ধান!
মাঝে মাঝে বাজে
বেহাগের সুর–
সেই কোন দূর –
অন্তঃপুর–
আচম্বিত কানে ভেসে আসে–
ঝিঁঝির কোরাজের সাথে
মিলিয়ে যায় বাতাসে।
এ ধরণীর সুখে অসুখে–
রাতের
শরীরে,হাতে,পায়ে,বুকে
জ্বালিয়ে দাও অন্তহীন
গৌরী দীপশিখা!
তোমরা শুধু মগ্নতায়-
যবনিকা,
এমন করে আর খুঁজো
নাকো
উল্কা,ধুমকেতু,নীহারিকা।
তোমাদের তরে,এই
প্রাচীরের পারে —
এমন ঘন ঘোর অন্ধকারে
চাঁদ হাসে, মেঘ ভাসে,
দূরের নক্ষত্ররা নেমে আসে,
যাদের সাজিয়ে দাও স্বপ্ন-
থালায় ভূর্জ!
শুধু জীবনে আসবে বলে
নতুন কোন রক্তিম সূর্য।
নিকষ আধাঁর কালো বলে–
অপার স্বপ্ন দাও-
মায়াদন্ডে পলে পলে,,
রাতের শরীরে যতই রাখো
বহ্নিশিখা জ্বেলে–
চোখের পাতায়
তন্দ্রাচ্ছন্ন,চিরদিনের ঘুম
চলে এলে
সবকিছু চিরতরে ফেলে–
কোন অমানিশার ঘোরে
যাও মিলিয়ে শুধু এ নিকষ
কালো অন্ধকারে,
আরক্ত শত জ্বালানী নয়,
রাত্রিকে ভালোবেসে
সমুজ্জ্বল নক্ষত্র-হৃদয়–
পারো যদি জ্বালাতে!
রাত্রির মুকুটে হিরার
মতো জ্বলজ্বলে আকাশ-
স্বপ্নায়তে,,
তখন ঐ অন্ধকারের
আকাশ পারে–
হাজারো দৃষ্টি চলে যায়
বারেবারে,
বিমুগ্ধ আঁখিপাতে
সেই অপরূপ নক্ষত্রের রাতে।
নিকষ কালো আধাঁর বলে—-
তব সে আধাঁরে নির্বিকল্পে
দাও হৃদয় জ্বেলে।