নিউজ ডেস্ক: গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালানো নিরাপদ ডটকমের সিইও গ্রেপ্তার। ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ ভাগ ডিসকাউন্ট! পণ্য ডেলিভারি ত্রিশ দিনদিনের মধ্যে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘নিরাপদ ডটকমের’ এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়েছেন ৪ হাজারের বেশি গ্রাহক। ১২ হাজার অর্ডারের বিপরীতে প্রায় ৮ কোটি টাকা নিয়ে হয়েছিল লাপাত্তা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গোয়েন্দা জালে ধরা পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকতা। ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন দেখে পণ্য অর্ডার করার আগে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ পুলিশের।
ত্রিশ ভাগ ডিসকাউন্টে নিজের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য শাহজাহান নামে সাধারণ এ চাকরিজীবী পাঁচটি মোবাইল সেট অর্ডার করেছিলেন নিরাপদ ডটকম নামে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি হওয়ার কথা থাকলেও পেরিয়ে গেছে ৯ মাস। পণ্য তো জোটেইনি ফেরত পাননি টাকাও। একই প্রতিষ্ঠানে অগ্রিম টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরও অনেকে।
ভুক্তভোগীদের দায়ের করা মামলায় গোয়েন্দা পুলিশ রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার খানকে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং অসংখ্য সিম কার্ড।
২০২০ সালের আগস্টে ইলেকট্রনিক ও গ্রোসারি পণ্য নিয়ে শুরু ‘নিরাপদ ডটকমের’ যাত্রা। মাস যেতে না যেতেই ৩০ থেকে ৫০ ভাগ ডিসকাউন্টের অফার। সঙ্গে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পণ্যের হোম ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি। হুমড়ি খেয়ে পড়েন গ্রাহকরা। তিনমাসেই গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ হাজারের বেশি। অর্ডার পায় ১২ হাজার। প্রতিষ্ঠানটির একাউন্টে জমা হয় গ্রাহকের প্রায় ৮ কোটি টাকা। আর সেই টাকা নিয়ে অনেকটা নিরাপদেই লাপাত্তা হয়ে যায় নিরাপদ ডটকম।
সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (ডিবি) উপ পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, আমরা সব সময় বলে থাকি কখনোই অগ্রিম টাকা পরিশোধ করবে না। প্রতিটি পেজ রিভিউ দেওয়া থাকে বা কমেন্টস দেওয়া থাকে সেগুলো দেখবেন। কোনো ক্রেতা প্রতিরিত হয়েছে কিনা। ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ কার্যকর হলে এ ধরনের প্রতারণা রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে পুলিশ।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার সতর্কতকার সঙ্গে ক্রয় করার কথা জানান।
তবে পুলিশ আরও বলছে, কোনো ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপনেই প্রলুব্ধ না হওয়া উচিত।