মোঃ আনোয়ার হোসেন আকুঞ্জী, খুলনা ঃ ত্বীন সম্পর্কে মহাগ্রন্থ আল কোরআনে একটি সূরা রয়েছে। ত্বীন শব্দের অর্থ আঞ্জির বা ডুমুর ফল। মানুষের কাছে এটি বেশি পরিচিত না হলেও কেউ কেউ তা দেখেছেন। পুষ্টিগুণে ভরপুর পবিত্র কোরআনে বর্ণিত এই ত্বীন ফলের চাষ হচ্ছে এখন খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায়। শখের বসে শুরু হলেও এখন তা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছে। আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ডুমুর আকৃতির এই ফল সবার নজর কেড়েছে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ঘোনা মাদারডাঙ্গা গ্রামের রবিন্দ্রনাথ মণ্ডলের পুত্র সফল চাষি নিউটন মণ্ডল। লেখাপড়ায় মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর আগেই শকের বসে ঝুঁকে পড়েন কৃষি চাষে। ২০০৩ সালে নিউটন ্মণ্ডল বিদেশী কচু চাষে সফলতা অর্জন করেই দেশে বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেন। রামবুটান, পার্লিমন, ডরিয়ান, এ্যাবাকাটা, কমলা, আপেল, ননিফল, চুইঝাল, সূর্যডিম আমসহ ২৫২ প্রকারের ফুল ফল ও সব্জি চাষ করে তিনি সফলতা পেয়েছেন। সবজি, ফুল ও ফল চাষের পাশাপাশি গতবছর থেকে ত্বীন ফল চাষ শুরু করেছেন। এই ফলটি বেশ সুস্বাদু, পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল। চাষের ক্ষেত্রে তিনি সার্বক্ষণিক কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেয়ে থকেন।
সফল চাষি নিউটন ্মণ্ডল বলেন; ২০১৯ সালে লোক মারফত মিশরিয়ান ত্বীন ফলের একটি চারা ১ হাজার টাকায় সংগ্রহ করে শখের বসে বাড়ির ছাদে টবে (সিনথেটিক পট) রোপনের ৪ মাস পর গাছে ফল দেখা যায়। এরপর লোক মারফত ক্যারালা থেকে আরও ১’শ চারা এনে টবে বাড়ির ছাদে রোপন করি। বর্তমানে ১’শ ত্বীন গাছে ফুল এবং ফল এসেছে। তিনি আরও বলেন, এবছর বাইরে থেকে ২ হাজার চারা আমদানিপূর্বক বিক্রি করে ৩ লক্ষ টাকা মুনাফা পেয়েছেন। ত্বীন চাষে দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান ও বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে এর চাষাবাদ হয় এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন; ডুমুরিয়া উপজেলায় ত্বীন চাষ বাণিজ্যিকভাবে এটিই প্রথম। এ গাছে রোগ বালাই নেই বললেই চলে। নানাবিধ পুষ্টি গুণের পাশাপাশি বহুবিধ ঔষধি গুণও রয়েছে। ত্বীন ফলচাষে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নিউটন মণ্ডলের সবজি, ফুল, ফলের ব্যাতিক্রম চাষে অনেক কৃষক উৎসাহিত হচ্ছেন।