আ.শ.ম. এহসানুল হোসেন তাইফুর, কেশবপুর থেকে: কেশবপুরে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সরকারি মানবিক সহায়তা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা সোহান হোসেন (২৫) নিহত হওয়ার ঘটনায় আ’লীগ নেতার নামে মামলা হয়েছে। এলাকাবাসী পোস্টার মেরে মামলার আসামীদের ফাঁসির দাবি করেছেন। মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। পুলিশ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মে সকালে বালিয়াডাঙ্গা সাইক্লোন শেল্টারে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সরকারি সহায়তা বিতরণ চলছিল। এ সময় কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার ৯ নম্বর বালিয়াডাঙ্গা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ এবাদত সিদ্দিকী বিপুল এবং পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এতে দুই পক্ষের ১৫ জন আহত হন। শেখ এবাদত সিদ্দিকী বিপুল ও আবুল কালাম আজাদ গত পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।
সংঘর্ষে আবুল কালাম আজাদের ভাইপো ছাত্রলীগ নেতা সোহান হোসেন মারাত্মক আহত হলে তাঁকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার (১২ মে) রাতে মারা যান তিনি। নিহত ছাত্রলীগ নেতা সোহান হোসেন কেশবপুর পৌরসভার ৯ নম্বর বালিয়াডাঙ্গা ওয়ার্ডের আব্দুল হালিমের ছেলে। তিনি কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সোহানের মৃত্যুর খবরে বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই রাতেই এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়।
সংঘর্ষের ঘটনা উল্লেখ করে সোহানের চাচা পৌর আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন- পৌরসভার বালিয়াডাঙ্গা এলাকার মেহেদী হাসান (২৮), শেখ এবাদত সিদ্দিকী বিপুল (৪৬), সোহেল (২৮), রাজু হোসেন (২৩), আব্দুর রশিদ (৪৫), রহিম হোসেন রানা (২৪) ও আমির আলী (৪৫)। মামলায় আরো পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এদিকে সোহান হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসীর সৌজন্যে গত বৃহস্পতিবার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় আসামিদের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো হয়।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বোরহান উদ্দিন বলেন, সংঘর্ষে আহত সোহান হোসেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই মামলার প্রধান আসামি বালিয়াডাঙ্গা এলাকার দাউদ আলীর ছেলে মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদেরও গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।