শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঝিনাইদহে কোটা সংস্কারকারিদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,গুলি বর্ষণ, পুলিশসহ আহত-৪০, আটক-২ সারা দেশে নিহতের সংখ্যা ১৩ স্বাচিপ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ মামুন, সম্পাদক ডাঃ কাওসার শিবির কর্মী-ছাত্রদল এবং বহিরাগতরা ঢাবির হলে তাণ্ডব চালিয়েছে-মোজাম্মেল হক সারা বাংলা র ৮৮ এর চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীপালন সারা বাংলা’র ৮৮ মাদারীপুর জেলা প্যানেলের উদ্যোগে চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীপালন ঝিনাইদহে কোটা বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত-২০ রংপুরে পুলিশের গুলিতে কোটা আন্দোলনকারী আবু সাঈদ নিহত চীন-রাশিয়া সামরিক মহড়া ছাত্র নিহতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অসত্য: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

কুড়িগ্রামে প্রচন্ড ঠান্ডায় ১ জনের মৃত্যু

Reporter Name
Update : রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন

হাফিজ সেলিম,কুড়িগ্রামঃ  কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় হুল ফোটানো কনকনে ঠান্ডা আর উত্তরের সিরসিরি হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষ ঘরের বাহিরে থাকতেই পারছে না। উত্তর জনপদ এখন কার্যতঃ হিমঘরে পরিণত হয়েছে। এদিকে কনকনে ঠাণ্ডায় বোরোধানের চারাতুলতে গিয়ে রাজারহাট উপজেলায় আজাদ আলী (৪২)নামের ১জনের মৃত্যু হয়েছে । ৩১জানুয়ারী রবিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ নিম্নগামী থাকায় মানুষের দুর্ভোগ  চরমে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগের মুখে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। লাগাতার শৈত্যপ্রবাহের কারনে ভরা বোরো মৌসুমে তীব্র ঠান্ডায় পানিতে নেমে মাঠে কৃষি শ্রমিকরা চারা রোপন করতে না পারায় বোরোধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে। তীব্র ঠান্ডার কারনে কৃষিতে  বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে কাজ করতে না পারায় অনেক কৃষি শ্রমিক পরিবার নিয়ে খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে ।
আজ ৩১ জানুয়ারি রোববার সকালে রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেন্দ্রা মৌজার মৃত জহুর উদ্দিনের পুত্র কৃষি শ্রমিক আজাদ আলীসহ আলম, কালাম ও মোস্তাক  গোদ্দার পার ব্রীজের পাশে কনকনে ঠান্ডায় বোরোধানের চারা তুলতে যায়। চারা উত্তোলন কালীল সময়ে আজাদ আলী অস্বাভাবিক ঠান্ডায় জমিতেই ঢলে পরে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এলাকার ইউপি সদস্য বিপ্লব আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য মাইনুল ইসলাম ঠান্ডায় আজাদ আলীর মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেন।
 জেলার  হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিক গুলোতে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকেও শীত জনিত কারনে রোগী ভর্তির খবর পাওয়া গেছে।  বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা শীত জনিত রোগে। বৃদ্ধদের অধিকাংশই শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতলে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এদিকে ঘনকুয়াশা ভেদ করে দিনের ১২টার দিকে সূর্য কিছু ক্ষনের জন্য দেখা দিলেও উত্তাপ নেই। এ অবস্থায় উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত । কোথাও কোথাও দিনের বেলাতে আগুনের কুন্ডলী জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে ছিন্নমূল মানুষজন।
বিকেল ৫ থেকে ৬ টার মধ্যে রাস্তা, বাজার ঘাট, ঘরবাড়িসহ পুরো এলাকা ঘন কুয়াশার চাদরে  ঢাকা পড়ছে যা পরদিন সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত থাকছে । ফলে হাট বাজার ও রাস্তা-ঘাটে জন সমাগম কমে গেছে। ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচলে।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ৩১জানুয়ারী রবিবার দেশের  সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রাজারহাটে রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আরো ৭২ঘন্টা এরকম পরিস্থিতি  থাকবে বলেও জানান তিনি।
ঠান্ডার পারদ নিম্নগামী হওয়ায় অস্বাভাবিক কনকনে ঠান্ডার মুখে পড়েছে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ছিন্নমূল পরিবারের মানুষজন। গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগের মুখে রয়েছে, ছিন্নমূল, হতদরিদ্র পারিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে শীতের শুরুতে কিছু কম্বল বিতরণ করা হলেও তা অনেকের ভাগ্যে জোটেনি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ফারাজী পাড়ার কৃষক আবুল হোসেন ও মোজাহার আলী জানান, তীব্র শীতের কারণে কাজে কর্মে বের হওয়া যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ পানিতে কাজ করলে হাত পা অসাড় হয়ে যাচ্ছে। যারা দিনমজুর তারা কাজকর্ম করতে না পেরে মহা সমস্যায় রয়েছে ।
একই গ্রামের ফাতেমা বেগম, লাইলি ও আনোয়ারা জানান, ঠান্ডায় রাতে ঘুম হয়না। পাতলা কম্বল নিয়ে জোরসরো হয়ে থাকি। ছোট ছোট বাচ্চারা  সর্দি-কাঁশিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের কৃষি শ্রমিক আকবর হোসেন জানান, এত ঠান্ডা ঘরের ভেতরে থাকায় এখন কঠিন হয়ে পড়েছে, এ অবস্থায় ঠান্ডায় পানিতে নেমে চারা লাগালে মরে যাবো।
উলিপুর উপজেলার ভ্যান চালক ইয়াছিন আলী  জানান, কয়েকদিন ধরে রাতে দিনে সমান তালে ঠান্ডা পড়ছে। এখন যে অবস্থা তাতে বাহিরে বের হওয়ায় মুশকিল। গরম কাপড় নেই যে গায়ে দিয়ে ভ্যান নিয়ে বের হবো। কামাই না থাকায় বেশ কষ্টে আছি। এরকম দুর্ভোগের মুখে রয়েছে অনেকেই। এখন যেন  উত্তরের হিমেল হাওয়ায় গোটা জেলা কাঁপছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host