হাফিজ সেলিম, কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামে কতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ছুরিকাঘাতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কলেজ শিক্ষক আতাউর রহমান মিন্টুর ডান হাতের কব্জি বিছিন্নের ঘটনায় জেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুকে জড়িয়ে শ্লোগান ও বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু। এ সময় জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পদক ওবায়দুর রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজুসহ দলীয় নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু বলেন, গত ১৬ মার্চ ব্যক্তিগত দ্বন্দে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের পালপাড়ায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও কলেজ শিক্ষক আতাউর রহমান মিন্টুর ডান হাতের কব্জী কর্তন করে শরীর থেকে বিছিন্ন করে দেয় সন্ত্রাসীরা। পরবর্তীতে একটি মহল রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এঘটনায় আমাকে জড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে । আমি এ ঘটনার নেপথ্য নায়কদের ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে আতাউর রহমান মিন্টুর উপর বর্বরোচিত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারে দাবি করছি।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, এ সন্ত্রাসী ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি ‘মেহেদী হাসান বাঁধনের ‘বেপরোয়া হয়ে ওঠার পেছনে অতীতের রাজনৈতিক নেতৃত্বই দায়ী। মিন্টুর ওপর হামলাকারীদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই জানিয়ে, আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু বলেন, ২০১০ সালে এই বাঁধনের নেতৃত্বে যুবলীগ কর্মী উজ্জ্বলের হাত কাটা হয়। সেই হামলার বিচার না করে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। এবারের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা আমাদের কেউ নয়, তাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনাটি নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামীলীগের এই নেতা বলেন, যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। দীর্ঘ দিনের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রতার কারণে ঘটে যাওয়া একটি পৈশাষিক ঘটনাকে দলীয় পর্যায়ে জড়ানো কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়। এতে করে দল খাটো হয়, নেতৃত্ব খাটো হয়ে যায়।
মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় কয়েকজন নির্দোষ ও সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক কর্মীকে জড়ানো হয়েছে দাবি করে মঞ্জু বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক এটা আমি চাই। কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে নির্দোষ কাউকে জড়ানোর নিন্দা জানাই।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মার্চ দুপুরে জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের পালপাড়ায় দিনে দুপুরে কতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীর উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতের শিকার হন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আতাউর রহমান মিন্টু। ছুরিকাঘাতে মিন্টুর ডান হাতের কব্জি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, এছাড়াও অন্য হাত ও দুই পায়ে গুরুতর কাটা জখম হয়। বর্তমানে মিন্টু ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় গত (১৮ মার্চ) আহত মিন্টুর বাবা আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা মেহেদী হাসান বাঁধনকে প্রধান আসামী করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু সরকারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আসামীদের গ্রেপ্তারে রেপিড এ্যকশন ব্যাটালিয়নসহ পুলিশ সমন্বিতভাবে ভাবে কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুত তাদের আটক করতে সক্ষম হব।