গত এক মাসে দেশে আমদানির জন্য ঋণপত্র বা এলসি খোলার সংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমেছে। এর ফলে জুলাই মাসেই সাশ্রয় হয়েছে ২৩ হাজার ৬২২ কোটি টাকার আমদানি ব্যয়। বিষয়টিকে ডলার সংকট সামলাতে ব্যয় সাশ্রয়ে নেয়া সরকারের পদক্ষেপের সুফল হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডলার সংকট সামলাতে ব্যয় সাশ্রয়ে সম্প্রতি নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে বন্ধ রাখা হয় বিলাস পণ্যের আমদানি। শর্তারোপ করা হয় বিদেশ ভ্রমণেও। যার প্রভাবে গত জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার সংখ্যা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে দেশে পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৫৪৭ কোটি ৮৫ হাজার ৬৭ ডলারের। তার আগে জুন মাসে ঋণপত্র খোলার পরিমাণ ছিল ৭৯৬ কোটি ৪৫ লাখ ৩৮ হাজার ১০৫ ডলারের। সেই হিসাবে এলসি খোলায় এক মাসে আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ের পরিমাণ ২৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭ ডলার বা ২৩ হাজার ৬২২ কোটি টাকা। এ হিসেবে গত এক মাসে ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
ব্যয় সাশ্রয়ে সম্প্রতি সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপের সুফল হিসেবে অপ্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় কমেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে যে এলসির মাধ্যমে যে দ্রব্যাদি আনা হবে, তার প্রাইস রেট হয়তো বেশি দেয়া হচ্ছে। এর জন্য আমরা অনেক এলসি বন্ধ বা স্থগিত করে দিয়েছি।
সম্প্রতি ডলারের সংকট সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২৭টি বিলাস পণের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নতুন গাড়ি কেনা বন্ধসহ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আমদানি পণ্য দেশে আনার পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের মধ্যেও আনা হয়। দেশে ডলার সংকটের প্রেক্ষাপটে গত এপ্রিল থেকে এসব পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পণ্য আমদানির সবশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এপ্রিল থেকে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের পর ওই মাস থেকেই এলসি খোলার পরিমাণ কমে আসে। ওই মাসে আগের মার্চ মাসের চেয়ে নতুন এলসি খোলার হার কমে ১২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। যার ধারাবাহিকতায় বজায় রয়েছে এখনও।