একুশে ফেব্রুয়ারি
– মোঃ মতিয়ার রহমান
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
রক্তে লিখা মায়ের ভাষার বাংলা বর্ণমালা,
শহীদের রক্তে সিক্ত লাল শিমুল কৃষ্ণচূড়া।
তুমি শহীদ মিনারে সালাম, বরকত, রফিকের দীর্ঘশ্বাস;
বাঙ্গালি জাতির নিজস্ব সত্তা ও সংস্কৃতির বিকাশ।
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
মাতৃভাষার বিশ্বস্বীকৃতি,
বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের অমেয় শক্তি।
তুমি ভাষা আন্দোলনের আত্মচেতনার নিজস্ব সংস্কৃতি,
শহীদ মিনার তোমার অমর স্মৃতি।
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
ভাষা শহীদদের অবলেশ,
তোমার জন্য বাঙ্গালি পেয়েছে বাংলাভাষা আর বাংলাদেশ।
তুমি ছেলে হারা দুঃখিনী মায়ের হাহাকার,
বাকরুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ শহীদ মিনার।
একুশে ফেব্রয়ারি তুমি
বাঙ্গালির ইতিহাস ও ঐতিহ্য গৌরব গাঁথা,
সালাম বরকত রফিকের স্বরণে আয়োজিত একুশে বইমেলা।
তুমি কামরুল হাসান ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের চিত্রকর্ম,
সেই চিত্রকর্মে তুমি বাঙ্গালির চেতনা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠির শোষণ নির্যাতন,
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর রেসকোর্স ময়দানে মন গড়া ভাষন।
জিন্নাহর ঘোষণা, “উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা”
তোমার জন্য ছাত্রদের প্রতিবাদ না- না – না, এটি হতে পারে না।
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
খাজা নাজিমুদ্দিনে একই ঘোষণা উপেক্ষা করা প্রতিবাদ,
চার ফেব্রুয়ারি সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পালিত ধর্মঘট।
তোমার জন্য একশত চুয়াল্লিশ ধারা ভংগ করে রাজপথে মিছিল,
সে মিছিলে চললো গুলি, শহীদ হলেন সালাম বরকত রফিক!
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
ভাষা শহিদের আত্মা, শ্রদ্ধাভরে তোমায় স্বরণ করবো,
শোককে শক্তিতে পরিনত করে তোমার চেতনায় উদ্দীপ্ত হবো।
আজো ভুলিনি রাজপথের সেই জ্বলন্ত প্রাণের মিছিল,
তুমি বাংলাভাষা ও বাঙ্গালি জাতির বিকাশ নিজস্ব সংস্কৃতির।
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
সালাম বরকত রফিক জব্বার এ দিবসের স্মারক।
আমরা আজো ভুলিনি কখনো তোমায় ভুলতে পারবো না,
বাংলার মানচিত্র তুমি, তুমি লাল সবুজ পতাকা।
একুশে ফেব্রুয়ারি তুমি
ভাষা আন্দোলনের জাগ্রত দূত যুগিয়েছ আত্মচেতনা,
তাই বাঙ্গালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর অমর রচনা,
” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি”,
তুমি অবিনশ্বর, তুমি অমর, একুশে ফেব্রুয়ারি!!
-০-
তাং ২০/০২/২০২১খ্রিঃ