ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইউরোপকে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। একই সঙ্গে তাইওয়ান প্রশ্নে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে যুদ্ধংদেহী নীতি তা অবশ্যই এড়াতে হবে। চীন সফরকালে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্কের টানাপোড়নের মধ্যেই গত বুধবার (৫ এপ্রিল) বেইজিং সফরে যান ম্যাক্রোঁ। এই সফরে তার সঙ্গে আরও ছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লিয়েন। চীনে তাদেরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সফরে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ম্যাক্রোঁ। ওই বৈঠকে ইউরোপের জন্য কৌশলগতভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি। এরপর শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সফর থেকে ফেরার পথে বিমানে মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে এক সাক্ষাৎকার দেন ম্যাক্রোঁ। এতে তিনি বলেন, ইউরোপ এই মুহূর্তে একটা ‘বিশাল ঝুঁকি’র মধ্যে আছে। সেই ঝুঁকিটা হচ্ছে যে সংকট আমাদের নয়, তার মধ্যে আটকে যাওয়া। যা ইউরোপকে তার নিজস্ব কৌশলগত স্বাধীন নীতি গ্রহণে বাধাগ্রস্ত করবে।’
ম্যাক্রোঁর কথায়, ‘আমেরিকার অনুসারী হওয়ার জন্য ইউরোপের একটা চাপ রয়েছে। ইউরোপকে অবশ্যই এই চাপকে প্রতিহত করতে হবে। ইউরোপের অবশ্যই কৌশলগত স্বাধীন নীতি অনুসরণ করা উচিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকা উচিত।’
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে মনে করে চীন। তবে এই দাবির কঠোর বিরোধিতা করে আসছে তাইওয়ানের সরকার। সম্প্রতি দেশটির সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যেটা ভাল চোখে দেখছে না বেইজিং। দ্বীপ রাষ্ট্রটির নিয়ন্ত্রণে নিতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের বিষয়টিও বিবেচনা করছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দেশ।
গত বুধবার (৫ এপ্রিল) মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (৮ এপ্রিল) থেকে তাইওয়ানের চারপাশে তিনদিনব্যাপী সামরিক মহড়া শুরু করে চীন।
বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধি করা উচিত হবে না ইউরোপের। কিন্তু চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিজেদের একটি তৃতীয় অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইউরোপের নিরাপত্তা ও জ্বালানি নির্ভরশীলতার কথা উল্লেখ করেন ম্যাক্রোঁ। বলেন, ইউরোপকে তার নিজের প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগ করতে হবে। পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নতি ঘটাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে।