বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আবারো জেলে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ করেছে।
সম্প্রতি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কেএম হাফিজুল ইসলাম এর বেঞ্চের পর্যবেক্ষণের পর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশযাত্রা নিয়ে নতুন সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা বাতিল করার জন্য একটি আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে বরং ছয় মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।
এ পর্যবেক্ষণের ফলে রাজনীতিতে একটি নতুন গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। খালেদা জিয়া সর্বশেষ ৬ মাসের বিশেষ বিবেচনায় জামিন পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে এ জামিন দেওয়া হয়। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এ জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের পর খালেদা খালেদা জিয়ার কী অবস্থা হবে, তিনি কি বিদেশ যেতে পারবেন, নাকি তার জামিনের আবেদন একই নিয়মে আবার বহাল রাখা হবে অথবা তাকে জেলে যেতে হবে- এ তিন সম্ভাবনার মধ্যে কোন সম্ভাবনা বেশি জোরালো তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা বিচার-বিশ্লেষণ।
গোপন সূত্র থেকে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তিন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম উদ্যোগ হলো চলমান মামলাগুলো থেকে জামিন নেয়া। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৪টি মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা অন্যতম। এখন যদি ৬ মাসের মধ্যে এ মামলাটি নিষ্পত্তি করতে হয় এবং হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুধাবন করলে এ মামলাতেও খালেদা জিয়ার দণ্ডিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ মামলায় যদি খালেদা জিয়া দণ্ডিত হন তাহলে এ মামলার জন্যও আবার নতুন করে নির্বাহী আদেশ নিতে হবে, অথবা জামিনের আবেদন করতে হবে।
এ মামলা নিষ্পত্তি হলে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আর হাইকোর্টের এ রায়ের ফলে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল যে, খালেদা জিয়ার আপাতত বিদেশে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, অন্তত গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত।
কারণ হাইকোর্টের এ নির্দেশনায় সুস্পষ্টভাবে এই মামলা ছয় মাস সময়ের মধ্যে নিস্পত্তি করতে বলা হয়েছে। কাজেই এ ছয় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলে তা হাইকোর্টের আদেশের এক ধরনের লঙ্ঘন। একই সঙ্গে এটি হবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর এক ধরনের হস্তক্ষেপ।