সবুজ হোসেন, দৌলতপুর: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিনের কাছে বুধবার রাতে খাদ্য সহায়তা চেয়ে ফোন করেন এক বৃদ্ধা। ওই বৃদ্ধার ফোন পাওয়ার পর ওসি তাৎক্ষণিক থানার এসআই অরুণ কুমারকে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঠান। বৃদ্ধার দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান এসআই অরুণ কুমার। তিনি ফিরে এসে ঘটনা সম্পর্কে দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিনকে অবগত করলে বৃহস্পতিবার সকালে এক মাসের খাদ্য সহায়তা নিয়ে ওই বৃদ্ধার দেওয়া ঠিকানায় হাজির হন দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলামসহ থানার বেশ কয়েকজন অফিসার। দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিনও রওনা হন ওসির সফর সঙ্গী হিসাবে। প্রায় ৬০ বছরের অধিক বয়সের ওই বৃদ্ধা বলেন, আমার স্বামী পরিত্যক্তা এক মেয়েকে নিয়ে পরের একটি বাড়িতে বসবাস করি। আমি এবং আমার মেয়ে দুজনেই অসুস্থ। পাড়া প্রতিবেশীর সহায়তায় আমরা দুবেলা-দুমুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি। কিন্তু করোনার সময়ে সেই প্রতিবেশীদের থেকেও আর তেমন কিছু আমরা পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে একজন ব্যক্তির থেকে দৌলতপুর থানার ওসি সাহেবের ফোন নাম্বারটা নিয়ে ফোন করেছিলাম খাদ্য সহায়তা চেয়ে।
তিনি আরো বলেন, ওসি সাহেব যে খাদ্য সহায়তা নিয়ে আমার বাড়িতে এসেছেন, সেটা দিয়ে হয়তো আমার এক মাসেরও অধিক সময় পার হয়ে যাবে। তাকে সরকারি কোনো খাদ্য সহায়তা বা কোনো ভাতা কার্ড পেয়েছেন কিনা এই প্রশ্ন করলে তিনি জানান, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হয়েও সরকারি কোনো রকম সুযোগ-সুবিধা পাননি তিনি।
দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, বুধবার রাতে হঠাৎ একজন বৃদ্ধা ফোন করে আমাকে বলে স্যার আমার বাড়িতে কোনো খাবার নাই। আমি এবং আমার মেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি। এমন খবর পাওয়ার পর ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ওই বৃদ্ধার দেওয়া ঠিকানায় এসআই কুমারকে পাঠাই।
ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরে আমরা থানার পক্ষ থেকে ৩০ কেজি চাউল, ডাল, তেল, লবণ, আলুসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি ওই মহিলার কাছে এবং প্রতি মাসেই আমরা কিছু না কিছু সহযোগিতা করার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।