ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ হরিণাকুণ্ডুর মাঠ প্রশাসনে নারী ইউএনও সুস্মিতা সাহা স্বগৌরবে কাজ করে চলেছেন। বাল্য বিবাহ, মাদক, আত্মহত্যা, অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রনে সব সময় ছুটে চলেছেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।
“সুশাসনে গড়ি সোনার বাংলা” এই শ্লোগান কে ছড়িয়ে দিতে অবিরাম গতিতে তার উদ্যোম মনোদীপ্ততায় এগিয়ে চলেছেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রশাসন। অনিয়ম, দুর্নীতি ও মাদকের আধাঁর কেটে আলোর মিছিলের সারথি বানিয়েছে হরিণাকুণ্ডুর যুব সমাজ কে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের আলো আজ ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। সাধারণ জনসাধারণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশায় তিনি যেন এক স্বপ্নকন্যা। তিনি হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদানের পর থেকে সরকারের নানামূখি সেবাসমূহকে সর্বাত্মক স্বচ্ছতার সাথে সাধারণ জনগণের দোরগোড়ার পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঝিনাইদহের সাবেক ডিসি মনিরা বেগম এবং বর্তমান ডিসি এসএম রফিকুল ইসলামের অনুপ্রেরণায় হরিণাকুণ্ডু থানা, উপজেলা কৃষি অফিস, এলজিইডি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন এনজিও’র সহযোগীতায় বাংলাদেশর প্রথম স্মার্ট ভিলেজ হিসেবে নিভৃত পল্লী হিজলী গ্রামকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলার কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক বাংলাদেশের প্রথম এ্যাপস তৈরি করে উপজেলাকে অনন্য উচ্চতায় পৌছে দিয়েছেন। এই এ্যাপসের মাধ্যমে উপজেলার দুই লক্ষের অধিক জনগনকে প্রসূতি কল্যাণ, শিশু কল্যাণ, রোগী কল্যাণ, মানসিক স্বাস্থ্য ও সাপে কাটা রোগীদের স্বাস্থ্য সেবায় সহায়তা করে আসছেন। এছাড়াও বাল্যবিবাহ, আত্মহত্যা প্রতিরোধ, মাদক বিরোধী অভিযান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ, বাজার মনিটরিং এবং ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বাজারে পণ্যের মান ও দাম নিয়ন্ত্রনে কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা সংষ্কার, মসজিদ, মন্দির, শ্মশাণ সংষ্কার, স্কুলের শিক্ষার মান ও অবকাঠামো নির্মাণসহ পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব নিরসনে দায়িত্বের সাথে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ও খেলাধুলায় একাধিকবার জেলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জণ করেছে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুজিব ভাস্কর্য স্থাপন ও সংস্কার করেছেন, দুঃস্থ অসহায় গৃহহীনদের জন্য তার সময়ে ৬০টিসহ মোট ১০১টি গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি হরিণাকুণ্ডুতে এত অল্প দিনের মধ্যে একজন শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময়ে মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীর গুণগত লেখা পড়ার জন্য মানসম্মত বিদ্যাপীঠ গড়ে তোলার নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। বিদ্যালয়ে ইউএনও’র ঝটিকা অভিযানের ফলে নিয়ম মাফিক চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। ক্লাসের পড়া ক্লাসেই নিশ্চিত করার ফলে প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। তিনি উপজেলায় নারী শিক্ষা উন্নয়নে এবং কর্মসংস্থানে কাজ করে যাচ্ছেন অবিরত। এক প্রশ্নের জবাবে সুস্মিতা সাহা বলেন, প্রশাসন ক্যাডার নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই উন্মুক্ত। তবে এখানে একজন পুরুষ কর্মকর্তা যেভাবে অনায়াসে খ্যাতি বা সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেন, একজন নারী কর্মকর্তাকে তার দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণকরে গ্রহণযোগ্যতার সেই পর্যায়ে আসতে প্রচুর কষ্ট করতে হয়। একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনিক কাজে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ছোটখাট বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে যদিও সে বাধা দক্ষতার সাথে অতিক্রম করার চেষ্টা করেছি। কারণ, একজন নারী কর্মকর্তার কাছে নারী-পুরুষ সকলেই নির্বিঘ্নে তাদের সমস্যাগুলো প্রকাশ করতে পারে, যা জনগণের অধিকার নিশ্চিতকরণসহ নারীর ক্ষমতায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তিনি আরো বলেন-এই উপজেলায় যোগদানের পরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, উপজেলা প্রশাসন থেকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার গৃহহীনদের জন্য তৈরি বাড়ি সুষ্ঠু ভাবে অসহায় মানুষের মাঝে হস্তান্তর করেছি। স্থানীয়রা বলেন, বর্তমান উপজেলা প্রশাসনের দায়িতেরত্ব ইউএনও মহোদয় খুবই দায়িত্বশীল এবং কর্মঠ। সরকারের রুটিন কাজকর্ম থেকে উন্নয়ন সবই সে নিপুণ হাতে দক্ষতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। মাদক, বাল্যবিবাহ, দুনীর্তিসহ বিভিন্ন অনিয়ম নির্মূলে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি জনগণের অধিকার রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি সরকারের সেবা প্রকৃত ব্যক্তির প্রাপ্তির বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। প্রশাসনে রাজনীতি নয়, উন্নয়নের জন্য প্রশাসন। একজন নারী কর্মকর্তা যোগদান করায় অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেছিল কিন্তু তিনি যোগ্যতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি একজন দক্ষ অফিসার। রাষ্ট্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রাধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের নীতি বাস্তবায়নে প্রশাসনে দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করছেন। সম্পূর্ণ প্রচার বিমুখ, উদর ও সাদা মনের মানুষের মর্যাদা তথা মানুষের উন্নয়নের অদম্য অগ্রযাত্রায় তিনি আজ একজন অভিন্ন আলোর পথের সারথি।