এনএসবি ডেস্ক: শুক্রবার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা সা’দ সাহেবের ছোট ছেলে ইলিয়াস বিন সা’দ এর বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। প্রথমদিনে গতকাল অনুষ্ঠিত হয় বৃহত্তম জুমার জামাত। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী লাখো মুসল্লি ছাড়াও রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ জুমার জামাতে শরিক হন। দুপুর ১টা ৫০ মনিটে জুমার নামাজ শুরু হয়। জুমার জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা সা’দ সাহেবের বড় ছেলে ইউসুফ বিন সা’দ। ইজতেমার দি¦তীয় পর্বের প্রথম দিনে গতকাল শুক্রবার লাখো মুসল্লির উদ্দেশ্যে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বীরা পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে বয়ান করেন। কাল আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুই পর্বের ইজতেমা। শুক্রবার অনুকূল আবহাওয়া ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকায় ইজতেমায় আগত মুসল্লিগণ স্বাচ্ছন্দে বয়ান শুনছেন এবং ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল রয়েছেন। আজ শনিবার ইজতেমার দ্বিতীয় দিন।গত কয়েকদিন শীতের তীব্রতা কম থাকায় মুসল্লিদের ভোগান্তি কিছুটা কম। ইজতেমা মাঠের আশপাশে ময়লা-আর্বজনা ও ধুলার কারণে ইজতেমা এলাকায় চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।গাজীপুর সিটি করপোরেশন, ওয়াসা এবং ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগে প্রধান প্রধান সড়ক ও বিদেশি মুসল্লিদের চলাচলের পথে পানি ছিটানো হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। একদিকে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে ওয়াসার গাড়ি অন্যদিকে মুহূর্তেই আবার ধুলায় অন্ধকার হচ্ছে রাস্তাগুলো।
জুমার নামাজে ভিআইপিদের অংশগ্রহণ: গতকাল জুমার নামাজে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
যারা বয়ান করলেন: বাদ জুমা শেখ মোফলে (ভারত), বাদ আসর বয়ান করেন বাংলাদেশের শূরা মাওলানা মোশারফ হোসেন। বাদ মাগরিব বয়ান করেন ভারতের মাওলানা সা’দ সাহেবের বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। বয়ানে বলা হয় গরিরেব জন্য ঈদের নামাজের পর অতি উত্তম ইবাদত হলো শুক্রবারের জুমার নামাজ। এদিনে আল্লাহ্র কাছে যে যা চাইবে, আলাহ্ তা তাকে দেবেন। এ নামাজ আদায় করার তৌফিক আল্লাহ্ আমাদের দান করুন। জুমার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে ওজু-গোসল করে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর থেকে তার আমলনামায় নেকি লেখা শুরু হয়ে যায়। আমরা যা করবো আল্লাহ্কে রাজি-খুশি করার জন্যই করবো। আল্লাহ্ পাকের হুকুমমতো আমরা যেন সারা জীবন চলতে পারি সে চেষ্টা করতে হবে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে ও সারা দুনিয়ায় মানুষের মাঝে দীন কায়েম করার জন্য ছড়িয়ে পড়তে হবে। জুমা-পূর্ব বয়ানে বলা হয় সবার অন্তরে ফাজায়েলের এলেম ও আমল আসতে হবে। ফাজায়েলের এলেম শিখলে আমাদের অন্তর ইসলামে মশগুল থাকবে। আমাদের প্রত্যেকের প্রতিদিন যেমন খাওয়া, পড়া ও বিভিন্ন জিনিসের জরুরত হয়, হাজত হয়। প্রত্যেক ব্যক্তির ফাজায়েলে এলেমের জরুরত আছে। প্রত্যেকে এই এলেম জানতে হবে, শিখতে হবে। আর যখন ফাজায়েলে এলেম শিখবে, তখন তা দ্বারা আল্লাহ্ পাকের হুকুম এসে যাবে, এর দ্বারা রাসূল (সা.) এর তরিকা এসে যাবে।
মুসল্লির মৃত্যু: বিশ্ব ইজতেমায় এসে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৩ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- শেরপুর জেলা সদরের আবুল কালাম (৬৫), নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার কুতুবপুর গ্রামের আব্দুল হেলিম (৬২), দিনাজপুর জেলার, নবাবগঞ্জ থানার, শিবনগর গ্রামের মোহাম্মদ জহির উদ্দিন (৭০) তারা সবাই বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
বিদেশি মুসল্লিদের অংশগ্রহণ: গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিশ্বের ৫৪টি দেশের প্রায় ৭ হাজার বিদেশি মেহমান ইজতেমা ময়দানে তাদের জন্য তৈরি করা বিভিন্ন তাঁবুতে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম। তবে আয়োজক কমিটি আরও জানায়, আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত বিদেশি মেহমানের আগমন অব্যাহত থাকবে।