আবারও তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। এবার ইলেকট্রনিক যুদ্ধাস্ত্রসহ মোট ৩০টি যুদ্ধ যান পাঠিয়েছে তারা। জানুয়ারির পর সোমবারই সবচেয়ে বড় আকারে এই অনুপ্রবেশ ঘটায় চীন। তাইওয়ানে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেয়া সতর্কতার কয়েক দিন পরেই এ ঘটনা ঘটেছে। একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা তাইওয়ানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সেখানে সফর করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
চীনের এ অনুপ্রবেশের জবাবে তাইওয়ান তার যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। এর মধ্য দিয়ে তারাও চীনকে সতর্ক করেছে। কয়েক মাস ধরে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে চীন। তাদের দাবি, প্রশিক্ষণ মহড়া করছে চীন। কিন্তু সোমবারের ঘটনায় তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোন লঙ্ঘন করে ২২টি যুদ্ধবিমান।
এছাড়া ছিল ইলেকট্রনিক যুদ্ধাস্ত্র। পূর্ব সতর্কতা সৃষ্টিকারী এবং সাবমেরিন বিরোধী আকাশযান। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ কথা বলা হয়েছে।
চীনের এসব যুদ্ধবিমান তাওয়ানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রতাস দ্বীপাঞ্চলের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে। এটা হলো তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনের অংশ। তবে সরাসরি তাইওয়ানের আকাশসীমা অতিক্রম করেনি বিমানগুলো। আকাশ প্রতিরক্ষা জোন হলো এমন এলাকা যা একটি দেশের বাইরে এবং জাতীয় আকাশসীমার অধীনে। কিন্তু ওই অঞ্চলে বিদেশি বিমানকে মনিটরিং করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এর নিয়ন্ত্রণ করা হয়। স্বঘোষিত এসব এলাকা হলো টেকনিক্যালি আন্তর্জাতিক আকাশসীমা।
কমপক্ষে এক বছর ধরে তাইওয়ান রিপোর্ট করে আসছে যে, চীন তাদের আকাশসীমা, আকাশ প্রতিরক্ষা জোন লঙ্ঘন করছে। তাইওয়ান দাবি করে তারা স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। তাদের নিজস্ব আইন আছে। নিজস্ব সরকার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু চীন বলে আসছে, তাইওয়ান চীনের অংশ। তারা শক্তি প্রয়োগ করে হলেও দেশটিকে তাদের সঙ্গে যুক্ত করবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন চীনের ঘন ঘন যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে এই মহড়া দেয়ার মধ্য দিয়ে তাইওয়ান সরকারকে হুঁশিয়ারি দেয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার এশিয়া সফরে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় তিনি বলেছেন, তাইওয়ানের এত কাছ দিয়ে (যুদ্ধবিমান) উড়িয়ে এই মুহূর্তে বিপদকে উস্কে দিচ্ছে চীন। তিনি চীনকে এ সময় কড়া সতর্কতা দেন। বলেন, বেইজিং যদি তাইওয়ানে আগ্রাসন চালায় তাহলে সামরিক উপায়ে জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ছিল অস্পষ্ট। কিন্তু বাইডেনের কথায় পরিষ্কার যে, তারা তাইওয়ানের পক্ষ নেবে।