হাফিজ সেলিম,কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দু’টি করে কমিটি দিয়ে চলছে ওয়ার্ড,ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামীলীগ। ফলে দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে দুরুত্ব বাড়ছে। সেই সাথে ভেঙ্গে পরেছে দলীয় শৃঙ্খলা।
জানা গেছে,গত ২০১৯ইং সনের ৩০ নভেম্বর রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বাষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি গ্রুপের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়ের করেন। ওই দিন দুপুরে সাবেক জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে রাজারহাট কারিগরি বাণিজ্যিক কলেজ মাঠে বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় সাহের উদ্দিন ধনীকে সভাপতি ও আবুনুর মোঃ আক্তারুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৯ সদস্য বিশিষ্ঠ উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষনা করা হয়। অপরদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস ছালাম চাষীর নেতৃত্বে ওই দিন বিকেলে রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের ৬৯ সদস্য বিশিষ্ঠ পৃথক কমিটি করেন। এতে আব্দুস ছালাম চাষীকে সভাপতি ও আসিফ সোহরাওয়ার্দী রাজনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা দেয়া হয়। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুস ছালাম চাষী গ্রুপ তাদেরকে সম্মেলন স্থলে প্রবেশে বাঁধা প্রদানের অভিযোগ করেন। এর আগে উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড গুলোতে একই ভাবে দু’গ্রুপের পৃথক-পৃথক কমিটি করা হয় ।
এরপর থেকে ওয়ার্ড,ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামীলীগ দলীয় এবং জাতীয় কর্মসূচী গুলো আলাদা ভাবে পালন করে আসছে। ওয়ার্ড থেকে উপজেলা পর্যন্ত দু’গ্রুপের নেতারাই আওয়ামীলীগের একই পদ পদবী দাবী করছেন। উমর মজিদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক (আবুনুর গ্রুপ) আব্দুস ছোবহান জানান,নিয়ম নীতি মেনে আমরা ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি করেছি। তিনি স্বীকার করেন,ইউনিয়ন কমিটিগুলো অনুমোদনের ক্ষেত্রে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি স্বাক্ষর না করায় সহ-সভাপতির স্বাক্ষরে অনুমোদন করা হয়েছে।
নাজিমখাঁন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি (আব্দুস ছালাম গ্রুপ) আকবর আলী বলেন,আমাদের কমিটি হয়েছে প্রকাশ্যে। তারা যেটা দাবী করছে এটা নিয়ম মাফিক হয়নি। আওয়ামীলীগের প্রবীণ কর্মী বাদশা মিয়া বলেন,আমরা চাই একটি সমন্বিত কমিটি। যেখানে দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের নিয়ে নিরপেক্ষ ভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুনুর মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন,বিতর্কিত প্রার্থীর পক্ষে সাবেক সভাপতি আব্দুস ছালাম চাষী কাজ করেছে,এটা তার অপরাধ। জেলা আওয়ামীলীগের ১২জন নেতার উপস্থিতিতে কাউন্সিল করা হয়েছে এবং জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি অনুমোদন হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুস ছালাম চাষী বলেন,রাজারহাট সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বহিরাগত ভাড়াটে লোকদের প্রহরায় তারা নামমাত্র কাউন্সিল করেছে। নৌকা প্রতীক নিয়ে আমি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করা সত্বেও আমাকে বিতর্কিত অপবাদ দিয়ে কাউন্সিলে প্রবেশ করতে না দেয়ার বিষয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাক্ষাত করে অভিযোগ প্রদান করেছি। তারা ওই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের আশ^াস দিয়েছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামীলীগের নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন,২০১৯ইং সালে রাজারহাটে এক পক্ষ একটা কমিটি করার কারণে দুইটা বড় বড় পক্ষ হয়, এখন বঞ্চিত নেতা কর্মীরা খুব ক্ষুদ্ধ। জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে আমরা কেন্দ্রের সাথে কথা বলে একটা সিদ্ধান্তে যাব। যে সিন্ধান্তে গেলে দলের জন্য ভালো হবে। কারণ ত্যাগী নেতাকমীদের বাদ দিয়ে তো কমিটি হয় না। বর্তমান দ্বিধা বিভক্ত কমিটির কথা তিনি স্বীকার করেন।