বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

কিস্তির টাকার চাপে বিষপানে নারীর আত্মহত্যা

সুজন হোসেন রিফাত, মাদারীপুর প্রতিনিধি
Update : রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

সুজন হোসেন রিফাত মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈরে  বিষপানে এক নারীর মত্যু হয়েছে।( ২০ অক্টোবর)  শুক্রবার সকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায়  ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  মত্যু হয় হালিমা বেগমের। স্বজনদের অভিযাগ, ঋণর টাকা পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করায় লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় হালিমা। এনজিও’র এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর। অভিযুক্ত কর্মকর্তারা অভিযাগ অস্বীকার করেলও আইনগত ব্যবস্থা  গ্রহনপর আশ্বাস পুলিশের।
স্বজনরা জানায়, চলতি বছরর ২৯ জানুয়ারি বেসরকারি এনজিও বিজ-এর মাদারীপুরের রাজৈর শাখা থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নেন হালিমা বেগম নামের  এক নারী। প্রতি সপ্তাহে  ১৫শ’ টাকা করে কিস্তি দেওয়ার কথা। গত বুধবার ২৮নং কিস্তির টাকা চাইতে বাড়িত যান প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মী সাইফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। টাকা দিত না পারায় অকথ্য ভাষায় পরিবারের সবাইক গালিগালাজ করেন তারা। একপর্যায় গোয়ালঘর থেকে  গরু বাহির করে নিয়ে যাবার চষ্টা করেন এনজিও’র মাঠকর্মীরা। বাঁধা দিলে ক্ষিপ্ত হন সাইফুলসহ সাথে থাকা লোকজন। পাওনা কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে একদিন সময় দেন তারা। তা না হলে বিষ খেয়ে হালিমাক মরতে বলেন বিজ-এ কর্মরতরা।
 পাড়াপ্রতিবেশির সামনে এমন অপমান সইতে না পেরে বুধবার রাতেই বিষপান করেন হালিমা। গুরুতর অবস্থায়  তাকে  প্রথমে উদ্ধার করে রাজৈর উপজলা স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। পরে  অবনতি হলে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল। শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  মারা যান হালিমা।
নিহত হালিমা বেগমের মেয়ে সুখি আক্তার বলেন, আমার আম্মু ৬০ হাজার টাকা ঋণ আনছে। প্রতি সপ্তাহ ১৫শ’ টাকা কিস্তি। বেশির ভাগই কিস্তি শেষ হয়েছে। আমাদের সঞ্চয়রের অনেক টাকা জমাও আছে। বুধবার সাইফুলসহ কয়েকজন বাড়িত আসে, আম্মু বলছে এই সপ্তাহ টাকা দিতে পারবে না। পরের  সপ্তাহ একসাথে দুটি কিস্তি দিবে। কিন্তু  কেউ আম্মুর কথা শোনেনি। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, পরে গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে বের করে নিয়ে যাবার চষ্টা করে বিজ এনজিও’র লোকজন। যাবার সময় আম্মুকে বিষ কিনে মরে যেতে বলেন  তারা। আম্মু অপমান সইতে না পেরে  বিষ খায়। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
¯স্থানীয়  বাসিদা জগলুল শেখ বলেন, প্রথমে মিষ্টি কথা বলে ঋণ দেয়। পর কিস্তির টাকার জন্য চাপ দেয় কর্মকর্তারা। এমন ঘটনার দৃষ্টান্তÍমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। তা না হলে এনজিও কর্মীরা আরোও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
এদিক এনজিওর অফিসে গিয়ে কোন কর্মকর্তাকে না পাওয়া গেলেও অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মুঠফোনে  চাপ প্রয়োগের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলন, অতিরিক্ত দেনার কারনেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় হালিমা।
 রাজৈর থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষ জানান, নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযাগে এ ব্যাপার আইনগত ব্যবস্থা  গ্রহন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহত হালিমা বেগম রাজৈর উপজেলার নরারকাদি গ্রামের জবার মোড়লের স্ত্রী। সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তার। ৬০ হাজার টাকা নেয়া ঋণ সুদসহ ৬৭ হাজার ৬শ’ ২০  টাকা পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল ২০২৪ সালের ২৮ জানুয়ারি। এখন পর্যন্ত ২৭টা কিস্তিতে ৪০ হাজার ৫শ’ টাকার পরিশোধ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host