এস,এম,এ রউফ,কয়রা(খুলনা)ঃ টানা ৩ মাস বন্ধ থাকার পর জেলে ও পর্যটকদের জন্য খুলছে সুন্দরবনের দুয়ার। আজ ১ সেপ্টেম্বর থেকে উঠে যাবে সুন্দরবনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা। এই দিন থেকে পুনরায় পর্যটকরা যেতে পারবেন বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনে। আর বনের ওপর নির্ভরশীল জেলেরাও যাবে তাদের জীবিকার অন্বেষণে। শুক্রবার সকাল ১০ টায় বন বিভাগ থেকে জেলেদের মাঝে মাছ ধরার অনুমতিপত্র প্রদান করা হবে । দীর্ঘ ৯২ দিন অলস সময় কাটানোর পর মাছ ধরতে সুন্দরবনের যাচ্ছেন কয়রা উপজেলার শত শত জেলে। মাছ ধরতে যাবে এই খবর যেন তাঁদের কাছে উৎসবে পরিণত হয়েছে। আর এটিকে এ জনপদের মানুষেরা যেন উৎসবের আমেজ হিসবে দেখছেন। অভাব-অনটনে পড়ে থাকা বনজীবীরা কষ্ট ভুলে আবারও নতুন উদ্যমে রুজির সন্ধানে ফিরছেন সুন্দরবনে। ইতিমধ্যে নৌকা প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় বনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তের সব প্রস্তুুতি সম্পন্ন করেছেন তাঁরা। অনেকেই ব্যস্ত সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র নেওয়ার জন্য ফরেস্ট অফিসে । ৩১ আগস্ট বিকাল থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র গ্রহণে জেলেদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। তারা পারমিটের জন্য কাগজপত্র জমা দিচ্ছেন। কয়রার ৪নং কয়রা গ্রামের নুর মোহাম্মাদ বলেন, ‘দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ থাকার কারণে খেয়ে না-খেয়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে গেছি। সুন্দরবন খুলে দিয়েছে এখন অভাব-অনটন কিছুটা হলেও কমবে। বনজীবী রায়হান শেখ বলেন, সবার আগে পাস নিতে এসেছি। দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ ছিল। অনুমতি নিয়ে আগে যেতে পারলে বেশি মাছ পাব, এ জন্য আগে এসেছি।’ কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক জানান, কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১৩ হাজার ৫২৬ জন। তবে সবাই বনজীবী জেলে নন। এ ছাড়া নতুন জেলেদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কয়রার সুন্দরবন থেকে আহরিত মৎস্য স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি হয় বিদেশেও। খুলনা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক( এসিএফ) এজেডএম হাছানুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে জেলেদেরকে পারমিট দেওয়ার ব্যাপারে সকল স্টেশন কর্মকর্তাদেরকে বলা হয়েছে। তারা নিয়ম মেনেই পারমিট প্রদন করবেন। তবে যাতে কোন জেলে হয়রানী না হয় তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়রা উপজেলার বানিয়াখালী, কাশিয়াবাদ ও কোবাদক স্টেশন সহ খুলনা রেঞ্জের আওতায় ২ হাজার ৯০০ টি নৌকার বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) রয়েছে। এর মধ্যে কয়রা জেলেরা ৩ টি স্টেশন থেকে তারা পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করবে। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের (ডিএফও) ড.আবু নাসের মোহাসিন হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৩ মাস বন্ধের পর জেলেরা পারমিট নিয়ে সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরতে যেতে পারবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। নিষেধাজ্ঞার পরের এই সময়টাতে তাঁরা তুলনামূলকভাবে অধিক পরিমাণ মাছ আহরণ করতে পারবেন। তবে বন বিভগের শর্ত মেনেই তাদেরকে সুন্দরবনে প্রবেশ তরতে হবে।