রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি থামাতে গিয়ে সুফি শেখ (৩৫) নামের এক গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরও দুইজন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বন্দেখালী গ্রামের পশ্চিমপাড়া লাকিরমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিদ্দিক জোয়ার্দার অরফে ইদুর নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।নিহত সুফি শেখ ওই গ্রামের মৃত নবাব শেখের ছেলে। তিনি পেশায় গরু ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন- একই গ্রামের আফছার শেখের ছেলে সামছুল মৃধা, বাবর আলী শেখের ছেলে সবুজ মিয়া। এদের মধ্যে শামছুল মৃধার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসতবাড়ির পাশে চারকাঠা জমি নিয়ে বন্দেখালী গ্রামের মোবারক জোয়ার্দারের দুই ছেলে সাকেন জোয়ার্দার ও সিদ্দিক জোয়ার্দার অরফে ইদুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। দুই ভাই আলাদাভাবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই সামাজিক মাতব্বরের সঙ্গে গ্রাম্য দলাদলিতে যুক্ত ছিলেন। শুক্রবার সকালে ওই জমি দখল করতে গিয়ে সাকেন জোয়ার্দারের লাগানো কলাগাছ কেটে ফেলেন সিদ্দিক জোয়ার্দার। এসময় সাকেন ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দিলে তাদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী সুফি শেখ, শামসুল মৃধা, সবুজ আলী তাদের মারামারি থামাতে গেলে সিদ্দিক জোয়ার্দার অরফে ইদু গাছ কাটা দা দিয়ে তাদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরিবারের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে লাঙ্গলবাঁধ প্রাইভেট ক্লিনিক ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুফি শেখের মৃত্যু হয়। নিহত সুফি শেখের চাচাতো ভাই বাবর আলী শেখ জানান, সাকেন জোয়ার্দার বন্দেখালী গ্রামের বিএনপির সামাজিক মাতব্বর ছালামত মন্ডল ও ইদু জোয়ার্দার আওয়ামী লীগের আতিয়ার রহমানের সমর্থক। সাকেন জোয়ার্দার বিএনপির দল করায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে তার ভাই ইদু জোয়ার্দার জমি দখল করে নিয়েছিল। কয়েক সপ্তাহ আগে গ্রাম্য সালিশ মিমাংসার মাধ্যমে জমি বুঝে পান সাকেন জোয়ার্দার। শুক্রবার সকালে দুই ভাই মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে আমার ভাই সুফি শেখ থামাতে গেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ইদু জোয়ার্দার। নিহতের স্ত্রী লিখা খাতুন জানান, আমার স্বামী একজন গরু ব্যবসায়ী। দুই ভাইয়ের মারামারি থামাতে গেলে ইদু তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে। তিনি বলেন, ইদু চোর নামেই পরিচিত। তার অত্যাচারে গ্রামের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। এছাড়া তিনি একাধিক মামলার আসামি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুস্তাক শিকদার ও আতিয়ার রহমানের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত খুনি ইদুর বিচার দাবি করেন তিনি।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিদ্দিক জোয়ার্দার অরফে ইদুকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।