রয়েল আহমেদ, শৈলকূপা: (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: দাপর যুগে যমুনা নদীর তীরে দেবী দুর্গার মাধ্যমে কৃষ্ণ আরাধনা করতো যমুনা পাড়ের মানুষ। সেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান অনুসরণ করে কাত্যায়নী দেবীর মূর্তি স্থাপন করে প্রতিবছর পাঁচদিন ধরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায় শাশ্বত শক্তিরূপিণী দেবী শ্রী শ্রী কাত্যায়নী মায়ের পূজা করে আসছে।
বোধনের মাধ্যমে আজ ৭ নভেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার আদলে কাত্যায়নী পূজা। ১১ই নভেম্বর সোমবার বিজয়া দশমী পূজা ও মাতৃ প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে কাত্যায়নী পূজা সম্পন্ন হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার ঠিক এক মাস পরে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাতায়নী দেবী দূর্গার আরেক নাম। ধর্মীয় মতে কাত্যায়নী দেবী দুর্গার ৬ষ্ঠ রূপ। দুর্গা পূজার মতোই সবকিছু অনুষ্ঠিত হয় কাত্যায়নী পূজায়।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় এবছর ২২ টি মন্দিরে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুর্গা পূজার মতো সার্বজনীন উৎসব না৷ হলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অংশ কাত্যায়নী পূজা করে থাকে। খুব জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও শৈলকুপা পৌরসভার ঋষি পাড়ায় বেশ বড় গেইট, প্যান্ডেল, আলোকসজ্জার কমতি নেই। কাত্যায়নী পূজা ঘিরে ঋষি পাড়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পৌরসভার অনন্তবাদালশো গ্রামেও একটি মন্দিরে হচ্ছে কাত্যায়নী পূজা। এমনি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের দুই পাশে গাড়াগঞ্জের চন্ডিপুর ও ব্রাহিমপুরে ঋষি পাড়ায় দুটি বড় গেইট ও প্যান্ডেল করে মহা ধুমধামে পালিত হচ্ছে কাত্যায়নী পূজা। এবছর উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নে সর্বাধিক ৮ টি, মনোহরপুর ইউনিয়নে ১ টি, বগুড়া ইউনিয়নে ৩ টি, উমেদপুর ইউনিয়নে ২ টি, দুধসর ইউনিয়নে ৩ টি, ফুলহরি ইউনিয়নে ২ টি ও মির্জাপুর ইউনিয়নে ১ টি মন্দিরে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসবের মতোই কাত্যায়নী পূজায় সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সরকারী অনুদান বরাদ্দ নেই। এ ব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক উৎপল কান্তি রায় বলেন দূর্গা পূজায় প্রত্যেক মন্দিরে সরকারীভাবে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হলেও কাত্যায়নী পূজায় কোনো অনুদান বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি গীরিন চন্দ্র দাস জানান, সাবেক জেলা প্রশাসক রমা রানী রায়ের সময় কাত্যায়নী পূজাতেও সরকারী অনুদান দেওয়া হতো। বর্তমানে কোনো অনুদান বরাদ্দ দেওয়া হয়না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস জানান, কাত্যায়নী পূজায় সরকারী কোনো অনুদান বরাদ্দ নেই, তবে পূজা উদযাপনে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।