এন এস বি ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আদানির বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার অনেক টাকা বাকি রেখে গেছে। তবে কোনো একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার কাছে বাংলাদেশ জিম্মি হবে না। রোববার (০৩ নভেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। আজ ৩ নভেম্বর অত্যন্ত শোকাবহ একটা দিন। মুক্তিযুদ্ধে জাতীয় চার নেতার ভূমিকা ছিল অনেক। আমরা তাদের স্মরণ করি। আওয়ামী লীগ তাদের কাজ লুকিয়ে রেখেছিল, মূলত একজনের কৃতিত্ব জাহির করতে। আমরা জাতীয় চার নেতার বিষয়ে অবদান স্বীকার করি বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার সরকার কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা সমর্থন করে না। জাতীয় পার্টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক। জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলার ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে। সরকার যে কোনো আক্রমণের নিন্দা জানান।
এদিকে আজই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে ভারতের আদানি গ্রুপের। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার বকেয়া পরিশোধে আলটিমেটাম দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ না করা হলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে আদানি পাওয়ার।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর বকেয়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে উল্লেখিত শর্ত পূরণ করেনি বিপিডিবি।
বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড থেকে গত ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) আদানির গোড্ডা প্ল্যান্ট এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে মাত্র ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। পায়রা, রামপাল ও এসএস পাওয়ার ওয়ানসহ অন্যান্য বড় কারখানাগুলোতেও জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন কমে গেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনটিপিসির যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির বাগেরহাটের রামপাল প্ল্যান্ট এবং এসএস পাওয়ার আই এরই মধ্যে কয়লার ঘাটতির কারণে অর্ধেকেরও কম উৎপাদন করছে।একটি সূত্রের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বাংলাদেশ থেকে বকেয়া পরিশোধ খুবই ধীরগতিতে হচ্ছে, যার ফলে বকেয়া দিন দিন আরও বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে আদানি পাওয়ারকে প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এর আগের মাসগুলোতে ৯০-১০০ মিলিয়ন ডলারের মাসিক বিলের বিপরীতে বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে মাত্র ২০-৫০ মিলিয়ন করে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি আদানি। এর আগে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, দ্রুতই এ বিষয়ে একটি সমাধানে আশাবাদী তারা।