রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির অভিযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার ও তার সহকারি হারুন অর রশিদ নামে দুইজন আহত হয়ে শৈলকুপা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আহত ম্যানেজার আঃ হালিম জানান, হামলার ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিজানুর রহমান কনস্ট্রাকশন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে আলোচনা করে শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুুতি চলছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্মানাধীন শৈলকুপা-লাঙ্গলবাঁধ রোডে কাজ শেষে অবশিষ্ট থাকা সাব বেজের নির্মাণ সামগ্রি (খোয়া-বালির মিশ্রণ) অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুুতিকালে একটি স্থানীয় চাঁদাবাজ চক্র বাঁধা দেয়। থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেনের পুত্র উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ সাদাত হোসেনের নেতৃত্বে চলতি সপ্তাহে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। চাহিদামত টাকা না দেওয়ায় ভেকু মেশিন ব্যবহার করে লাঙ্গলবাঁধ টু শৈলকুপা রোডের মহিলা কলেজ অদূরে পাঠানপাড়া গ্রামে জমাথাকা অন্তত ১৫/২০ ট্রাক খোয়া বালির মিশ্রণ জোরপূর্বক তুলে নেয় চক্রটি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আঃ হালিম থানা বিএনপির সভাপতি সম্পাদকসহ একাধিক নেতাদের মৌখিকভাবে অবগত করলে তারা থানা বিএনপির কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেন। মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) সন্ধ্যায় আঃ হালিম ও তার সহযোগি হারুন অর রশিদ উপজেলা মোড়ের একটি কম্পিউটার ঘরে দরখাস্ত লিখতে গেলে সেখানে হামলার শিকার হন।
আহতদের অভিযোগ, যুবদল নেতা সাদাত হোসেনের নেপথ্য নেতৃত্বে একাধিক হামলাকারীরা তাদের মারপিট করে।
চিকিৎসাধীন হারুন অর রশিদ জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির কাজ শেষে তাদের অবশিষ্ট মালামাল অন্যত্র নিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তুু স্থানীয় সংজ্ঞবদ্ধ গ্রুপটি তাদের চাহিত টাকা না দেওয়ায় এবং বিএনপির নেতাদের অবগত করানোর কারনেই তারা হামলার শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ম্যানেজার আঃ খালেক মুঠোফোনে জানান, স্থানীয়দের অনৈতিক দাবি পূরন না করায় এবং তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের প্রস্তুুতি নেয়ায় নেক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। অভিযুক্ত যুবদল নেতা সাদাত হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করার বক্তব্য পাওয়া যায় নাই। তাবে তাঁর পিতা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এধরনের ঘটনা তিনি জানার পর পার্টি অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা ছিল, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি আবেদন পাওয়া যায়নি। তিনি স্থানীয় পাঠানপাড়ার কিছু ছেলে হামলার সাথে জড়িত বলে নিশ্চিত করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হামলার ঘটনায় তাঁর ছেলে জড়িত নয় বিষ্ণুদিয়া গ্রামের একজন মানুষ মারা যাওয়ায় ঘটনার সময় সাদাত হোসেন সেই জানাযায় ছিলেন। তার রাজনৈতিক সুনাম নষ্ট করতেই হয়তো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে থাকতে পারে। তিনি কঠোরভাবে এর ঘটনার ন্যায় বিচার করবেন বলেও নিশ্চিত করেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন বাবর ফিরোজ বলেন, বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছেন তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লিখিত অভিযোগ করলে সূষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুম খান বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ এধরনের অভিযোগ নিয়ে আসেনি তবে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।