মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার ‘নিখোঁজ’! শৈলকুপা রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটি গঠন সভাপতি আলমগীর অরণ্য , সাধারণ সম্পাদক টিটো মিজান মাদারীপুরে ডাকাত কামাল পহলান ওরফে সিএনজি কামাল (৪৩) আটক নৌকার মাঝি নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী শৈলকুপা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাকিল আহম্মেদ এর মতবিনিময় ফরিদপুরের মধুখালীতে পানিতে ডুবে নিখোঁজ ১ জন মাদারীপুর জেলা র কবিরাজপুর ছইফউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ এ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা হরিণাকুণ্ডুতে এক দশক ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নতুন ভবন ঝিনাইদহ সদরে মাসুম এবং কালীগঞ্জে শিবলী নোমানী চেয়ারম্যান নির্বাচিত রাজৈরে মহিলা মেম্বার ও নারী নেত্রীকে মারধরের অভিযোগ
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

শৈলকুপা হাসপাতালে রোগীর খাবার নিয়ে নয় ছয়

রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
Update : রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সকালের নাস্তায় দেওয়া হয়েছে একটি রুটি,ডিম ও কলা। তবে রুটির দিকে নজর দিলে চোখ ছানাবড়া হবার জোগাড়! রুটির প্যাকেটে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখের কোন কাগজ বা সিল নেই। ঠিক কবে রুটিটি তৈরি করা এবং কবে উৎপাদনের মেয়াদ পার হবে তা দেখে বোঝার উপায় নেই। রুটিটি ‘আগুনে দিয়ে বা রোদে শুকানো হয়েছে’ দেখে এমনটাই মনে হতে পারে। রুটির গায়েও নানাধরণের ময়লার উপস্থিতি। স্থানীয় বেকারী থেকে অর্ডার দিয়ে এসব নিম্নমানের রুটি খাওয়ানো হচ্ছে হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের। অনেক সময় তা খেতে না পেরে ফেলেও দিচ্ছেন রোগীরা। এমন চিত্র ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

এবার যাওয়া যাক ভাত, মাছ, মাংসে। সেখানেও রয়েছে রোগী-স্বজনদের অভিযোগের বস্তা। গত সোমবার খাদ্যতালিকা অনুযায়ী রোগীদের খেতে দেওয়ার কথা ছিল রুই মাছ। তবে সেই রুই মাছ হয়ে যায় সিলভার কার্প।

রোগী ও স্বজনরা বলছেন,‘তালিকা অনুযায়ী দেওয়া হয়না খাবার। যা দেওয়া হয় তা নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম এবং নিম্নমানের। একইসঙ্গে রয়েছে খাবার না পাওয়ার অভিযোগও। রান্না করা মাছ অধিকাংশ রোগীই খেতে পারেন না।

রোগীদের অভিযোগ, অনেকে দুই থেকে তিনদিন ভর্তি থেকেও খাবার পায় না। যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে কোন শিশু বাচ্চারও পেট ভরে না। যে কারণে বাড়ি বা হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হয়। তাছাড়া মাংসের তালিকায় সোনালী ও ব্রয়লার লেখা থাকলেও কোনদিন সোনালী মুরগীর মাংস দেয়া হয় না। শুধুমাত্র ১পিচ করে ব্রয়লার মুরগীর মাংস ও ১ পিচ আলুর টুকরো দেয়া হয়।

সরকারি হাসপাতালে ১৭৫ টাকা দিয়েই বরাদ্দ হয় একজন রোগীর নাস্তাসহ ৩ বেলার খাবার। এরমধ্যে আবার ঠিকাদারের লভ্যাংশ! রান্নাঘর থেকে কয়েকশ’গজ দূরে ট্রলিতে করে হাসপাতালে নেয়া হয় খাবার, তারপর যায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। রোগী আর স্বজনদের প্রশ্ন, এই খাবারে কতটুকুইবা রোগীর পুষ্টি চাহিদা মেটে? এদিকে এসব দিকে নজর নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

উপজেলার আউশিয়া গ্রামের ইউসুফ আলি নামে এক রোগী বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় খাবার কম দেয়া হয়। চাইলেও আর দেয়া হয় না। ভাত ও তরকারী আরেকটু বাড়িয়ে দিলে ভালো হয়। কিন্তু না দিলে তো করার কিছু নেই। বাধ্য হয়ে যা দেয়, তা-ই খেতে হয়।’

সরেজমিনে হাসপাতালের রান্নাঘরে গিয়ে দেখা যায়, ভর্তি রোগীদের দুপুর আর রাতের খাবারের জন্য সিলভার কার্প মাছ রান্না করা হচ্ছে। যদিও খাবারের শিডিউল অনুযায়ী দেবার কথা রুইমাছ। তবে রাঁধুনীর সহযোগী সোনিয়া বেগম জানালেন, যা বাজার করে এনেছেন,তা-ই রান্না করা হচ্ছে।

ভর্তি রোগী জাকিরন খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালের খাবার অনেক নিম্নমানের। এখানে বেশিরভাগ সময়ই সিলভার কার্প মাছ দেওয়া হয়। আর যে ভাত দেয় তাতে একজন মানুষের পেট ভরে না।’

আরেক ভর্তি রোগী মাজেদা খাতুন বলেন, ‘বাইরে থেকে খাবার কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই বাধ্য হয়ে হাসপাতালের খাবার খেতে হয়। কিন্তু খাবারের যে মান তাতে মুখে দেওয়া যায় না। অনেক সময় খেতে না পেরে ফেলে দেই।’

হাসপাতালের খাবারের টেন্ডার পাওয়া ঠিকাদার তৈয়বুর রহমান জানান, ‘সকালে নাস্তার রুটি প্রতিদিন আনা হয়। এছাড়া মাছ মাংস সহ খাবারের মান নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। মেন্যুতে যা আছে সে অনুযায়ী খাবার দেওয়া হচ্ছে। যারা কাজ পায়নি তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

মানহীন খাবারের প্রসঙ্গে শৈলকুপা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘এ ব্যাপারে তার কিছুই করার নেই। হাসপাতালের খাবারের তদারকি করার জন্য আরএমও’র কমিটি আছে। তারাই দেখভাল করেন।’

শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের খাবারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘মাঝেমধ্যে তদারকির অভাবে ও ফাঁকফোকড় গলিয়ে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার কথা আমরা শুনেছি, জেনেছি। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রোগীদের মেন্যু অনুযায়ী খাবার দেওয়া হবে। কোন ধরণের অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host