রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

৯ বছরেও ভারমুক্ত হয়নি ডুমুরিয়া কলেজ

Reporter Name
Update : রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

খুলনা প্রতিনিধি ঃ ৯ বছর ধরে ভারমুক্ত হয়নি ডুমুরিয়া কলেজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরাই বিগত ৯ বছর যাবৎ খুলনার ডুমুরিয়া কলেজটি পরিচালনা করছেন। অধ্যক্ষের শূন্যপদে ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগের বিধান না মেনেই তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ৯টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট মহল ও কলেজ অফিস সুত্রে জানা গেছে, কলেজের নিয়মিত অধ্যক্ষ এসএম গোলাম হায়দার অবসরে গেলে উপাধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩০ মে পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনিও অবসরে গেলে সিনিয়র শিক্ষক ধ্যানেশ কুমার গোস্বামী ২০১৯ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করলেও অধ্যক্ষ নিয়োগে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। তারপর সিনিয়র শিক্ষক রঞ্জন কুমার তরফদার দায়িত্ব নিয়ে ৩ বছরের মধ্যে ওই সময়ের গভার্ণিং বডি’র চাপে ৩ বার অধ্যক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেও একটি বিশেষ চক্রের চক্রান্তে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এরপর সিনিয়রিটি অনুসারে শিক্ষক অপরাজিতা মল্লিক ও আতাউর রহমান খান অল্প সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করেন।
তাদের অবসরের পর পরবর্তী সিনিয়র শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ২০২২ সালের ১৬ আগষ্ট থেকে ১ বছরের অধিক সময় ধরে দায়িত্ব পালন কালে কলেজ ভবনের বাহ্যিক কিছু উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত ০৭(১৫২৫) জাতীঃবিঃ স্মারক মোতাবেক দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে ২৫ জুন-’২৩ তারিখে কলেজ পরিদর্শক(ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, ‘যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের ১ বছরের মধ্যে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগদান করিতে ব্যর্থ হইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষরকৃত কাগজপত্রে ও কার্যবিবরণী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্বীকৃত অথবা গৃহীত হইবে না।’ তাছাড়া কলেজ শিক্ষকদের চাকরীর শর্তাবলি (সংশোধিত) ২০১৯’র পরিপন্থি হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওই দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নাই।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এতোসব আদেশ-নির্দেশ উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে বিশেষ স্বার্থে গত ২০ জুলাই কলেজের পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ল্যাব এ্যাসিসট্যান্ট, ২ জন কম্পিউটার অপারেটর, ২ জন অফিস সহায়ক ও নৈশপ্রহরী মোট ৯টি পদের জন্য দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
এ প্রসঙ্গে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্রের দাবি, কলেজের একটি বিশেষ গোষ্ঠী চায় না যে অধ্যক্ষ নিয়োগ হোক। তাই দীর্ঘদিন ধরে কোনো-না-কোনো ভাবে অধ্যক্ষের নিয়োগ পাশকাটিয়ে যেয়ে কোটি টাকা বাণিজ্যের আশায় ৩য়-৪র্থ শ্রেণির ৯টি পদের নিয়োগ দিতে ব্যস্ত। কলেজ গভার্ণিং বডি’র সদস্য হাজিডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি মিটিং-এর দিন সবার আগে কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি তুলেছিলাম। কিন্তু নেতারা অজ্ঞাত কারণে আগে ওই ৯ পদের নিয়োগ চায়।
ডুমুরিয়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ৬ মাসের বেশি দায়িত্ব পালন না করতে পারা বা অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ চিঠি সম্পর্কে সম্প্রতি অবগত হয়ে কলেজ সভাপতিকে বলেছি, আগে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ করতে হবে। তারা এসেই অন্য পদে নিয়োগ দেবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নিয়োগ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পানল সংক্রান্ত চিঠির বিষয়টি জানা থাকার পরও সভাপিত খান আতিয়ার রহমান বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনেক ভালো লোক। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা বলে তাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ পর্যন্ত রেখে দিতে চাই। ৯টি পদে নিয়োগের মধ্যে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের নিয়োগ হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক(ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা বলেন, ৬ মাসের অধিক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ না থাকার নিয়ম থাকলেও প্রায় ১০ বছর ধরে ডুমুরিয়া কলেজে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলার কথা জানার পরই তো কলেজে একটা চিঠি দিয়েছি। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host