এনএসবি ডেস্ক:ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের পরিবারের সদস্যরা ডিবিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।রোববার (২৮ জুলাই) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি।হারুন অর রশীদ বলেন, পরিবারের সদস্যরা ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা (সমন্বয়করা) ভালো আছেন দেখে পরিবারের সদস্যরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং আমাদের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ডিবি কার্যালয় একটা আস্থার জায়গা। এখানে কারো প্রতি অন্যায় আচরণ বা হেনস্তা করা হয় না। ভবিষ্যতেও করা হবে না। মানুষ যখন কোনো বিপদে পড়ে আমাদের কাছে আসে বা আমরা নিয়ে আসি, আমরা মূলত তাদের সিকিউরিটির জন্যই কাজটা করে থাকি।’
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয়কদের দেখা না করতে দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক নয়। গতকাল (রোববার) রাতেও পরিবারের লোকজন এসে দেখা করেছেন। আজও দেখা করেছেন।’
সমন্বয়কদের কেন তুলে আনা হয়েছে, জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘আপনারা জানেন কোমলমতি সাধারণ ছাত্ররা কোটা সংস্কারের আন্দোলন করেছিল। তাদের ভেতরে জামায়াত-বিএনপি গোষ্ঠী ঢুকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মকমূলক কাজ করেছে। তারা আমাদের পুলিশ সদস্যকে জ্বালিয়ে হত্যা করেছে, তারা সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। তারা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় আগুন লাগিয়েছে। আমরা মনে করি এসব সমন্বয়কদেরও নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের একটু দেখা দরকার।’জোর করে সমন্বয়কদের বিবৃতি আদায় করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা গুজবটি ছড়িয়েছেন, তাদের উদ্দেশে আমি বিনীত অনুরোধ করব, গুজব ছড়াবেন না। ডিবি একটি আস্থার জায়গা। এখানে কাউকে জোর করে রাখা হয় না। কারো প্রতি অন্যায়-অত্যাচার করা হয় না। জোর করে কোনো বিবৃতি নেয় হয়নি। আমি মনে করি তারা (সমন্বয়করা) রিয়েলাইজ করেছে, তারা আমাদের কাছে লিখিতভাবে বলেছে যে তাদের দাবি, পুরোটাই সরকার মেনে নিয়েছে। সে কারণে তারা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’
সমন্বয়কদের কতদিন ডিবি হেফাজতে রাখা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আমরা তাদের (সমন্বয়করা) সঙ্গে কথা বলছি, তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা মনে করি, তারা শিগগিরই তাদের পরিবারের কাছে চলে যাবেন। আমরা তাদের সিকিউরিটির বিষয়টা দেখছি।’ এর আগে রোববার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজত থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ছয় সমন্বয়ক। এ ঘোষণা দিয়ে তারা লিখিত বার্তাও দেন। বার্তায় বলা হয়, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে হতাহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।’