মোঃ শাহানুর আলম, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে মাঠে হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুল। দূর থেকে সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
এদিকে, ফসলের মাঠে ফোটা ফলগুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌর্ন্দযের শোভা ছড়াচ্ছে। তেমনি সরিষার হলুদ রাজ্য দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। একই সঙ্গে শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চাষীরা সরিষা ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন।
সরিষা চাষীরা জানান, গত বছর আশানুরূপ দাম পাওয়ায় এবং কৃষি বিভাগ সরিষা চাষে প্রণোদনা দেওয়ায় চলতি মৌসুমে কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের তরুন কৃষক সম্রাট বলেন, গত বছর ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছিল ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। ফলন পেয়েছিলেন ১২ মণ হারে। প্রতি মণ সরিষা ৩ হাজার দরে ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন।
তিনি আরও বলনে, গত বছর সরিষা চাষে আশানুরূপ লাভ হওয়ায় এবার ২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি এবারও ভালো ফলন ও ভালো দাম পাবো।
গাজীপুরের জুয়েল জানান, এবার তিনি ১ বিঘা জমিতে রবি সরিষার আবাদ করেছেন। তার জমিতে আগাম সরিষার ফুলে ভরে গেছে। তিনি আশা করছেন প্রতি বছরের মতো এবারও ভালো ফলনের।
তিনি আরও বলেন, আগে অনেক কৃষক সরিষা চাষ করতেন। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় তারা চাষ কমিয়ে দিয়েছিলেন। বাজারদর ৩ হাজার টাকার বেশি থাকলে কৃষকেরা সরিষা চাষে আরও বেশি উৎসাহী হবেন বলে মন্তব্য করেন এ কৃষক।
বলরামপুর গ্রামের কৃষক শান্ত বলেন, গত বছর ১০ কাঠা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। এবার ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করছি, গত বছর সরিষার ফলন ভালো ছিল, দামও ভালো পেয়েছিলাম। এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর বলেন, সরিষা ৩ মাস মেয়াদি ফসল। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে সরিষা চাষ করতে পারেন কৃষকেরা। বর্তমানে সরিষা চাষ কৃষকের কাছে লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। গত বছর সরিষার আশানুরূপ ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকেরা উৎসাহী হয়েছেন। সরিষা চাষ একদিকে যেমন মাটির উর্বরতা বাড়ায়, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি আরও জানান, আশা করছি কৃষকরা সরিষার ভালো ফলনে লাভবান হবেন। এখানকার উৎপাদিত সরিষার তেল দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণেও বড় ভূমিকা রাখবে।