কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ খুলনার কয়রা উপজেলায় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন আবু তালেব ইসলাম নামের এক যুবক । আলোচিত এই যুবক উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩নং কয়রা গ্রামের মাহবুর সরদারের ছেলে। সে ঝিলিয়াঘাটা বাজারের ফার্মাসিস্ট ঔষধ ব্যবসা করেন ।
গতকাল সোমবার (৪ নভেম্বর ) মনের আনন্দে তার নিজ বাড়িতে ১৫ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন আবু তালেব । শুধু তাই নয় বন্ধু-বান্ধব ও এলাকাবাসির মাঝে মিষ্টিও বিতরন করেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া দুধ দিয়ে গোসল ও মিষ্টি বিতরনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক যুবক’ বাড়ীর উঠানে চেয়ারের ওপর বসে আছে। পাশে রয়েছে কলস ভর্তি দুধ। সেখানে উপস্থিত তার প্রতিবেশীরা’ মগ দিয়ে তার মাথা ও শরীরে দুধ ঢেলে গোসল করাচ্ছেন। এ সময় তাকে বেশ হাসিখুশিও দেখা যায় ওই ভিডিওটিতে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩নং কয়রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী আবু তালেব জানান, তাদের সংসারে কোন দুঃখ কষ্ট অভাব অনাটন ছিলনা। কিন্তু তার স্ত্রী তামান্না খাতুন অবাধ স্বাধীনতা চায়, বিয়ের পরেও পড়াশুনা করতে চায়। তার বন্ধু বান্ধবের সাথে অবাধে যোগাযোগ রাখতে চায়। আমার স্ত্রী তামান্নার শর্ত আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারিনি। তিনি আরও বলেন এখন অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়েও ভালো আছি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে অনেক অশান্তিতে ছিলাম। আমার স্ত্রী সব সময় স্বাধীন ভাবে চলতে চাইত। আমি অনেক নির্যাতন সহ্য করেও সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে কোন ভাবেই সংসার করতে রাজি না।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে ২০২৪ সালের ৩মে কয়রা ইউনিয়নের ৪নং কয়রা গ্রামের আবুল বাশার সানার মেয়ে তামান্না খাতুনের সাথে আবু তালেবদের দুই পরিবারে সম্মতিতে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পারিবারিক ভাবে তাদের বিবাহ হয়। বিবাহের কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে তাদের সংসারে নানান বিষয়ে স্বামী -স্ত্রীর মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হতে থাকে। এভাবেই চলতে থাকে তাদের সংসার। এক পর্যায়ে তামান্না খাতুন আবু তালেবের সংসার করতে না চাইলে দীর্ঘদিন বাবার বাড়িতে থাকে। পরে স্থানীয় ভাবে মিমাংসার পর উভয়ের বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়।
অবশেষে গত রবিবার ৩ নভেম্বর বিকেলে দুই পরিবারে সম্মতিতে উপজেলা কাজী অফিসের মাধ্যমে তাদের আপোষ তালাক হয়। এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেয়ে মনের আনন্দে আবু তালেব ১৫ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ সোহরাব হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে অনেকবার মিমাংসার চেষ্টা করেছি কিন্তু মেয়ে কোন ভাবেই সংসার করতে রাজি নয়। এজন্য দুই পরিবারের সম্মতিতে আপস তালাকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।