রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পূর্বঘোষিত জনসমাবেশ চলছে বিএনপির। তবে সমাবেশে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির বক্তব্য প্রচার বা প্রকাশ করতে পারবে না। ফলে এই সমাবেশে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দিতে পারবেন না।সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেল তিনটায় এ জনসমাবেশ শুরু হয়। আগে থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দীতে আসতে থাকেন।
এদিকে এবার ২৬ শর্তে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। এর আগে গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) নয়পল্টনে ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়। সেই ২৩ শর্তের সঙ্গে আরও নতুন তিনটি শর্ত যুক্ত করে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী জনসমাবেশের অনুমতি দেয়া হলো।
নতুন তিনটি শর্ত হলো: সমাবেশে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বক্তব্য প্রচার করা যাবে না; আদালতের দিকে মাইক ঘুরিয়ে দেয়া যাবে না; আদালতের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না।
ডিএমপির দেয়া আগের ২৩টি শর্ত হলো:
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়। স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানেই (দক্ষিণ পূর্বে মহানগর নাট্যমঞ্চ, দক্ষিণের সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স, পশ্চিমে ফুলবাড়িয়া ক্রসিং ও উত্তর-পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত) সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. কোনো অবস্থাতেই অনুমোদিত স্থানের (দক্ষিণ-পূর্ব মহানগর নাট্যমঞ্চ, দক্ষিণের সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স, দক্ষিণ-পশ্চিমে ফুলবাড়িয়া, পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত) বাইরে কোনো ধরনের জনসমাগম করা যাবে না।
৫. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৬. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশের স্থলে, অভ্যন্তরে ও চারিদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯. শব্দদূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। কোনো ক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাহিরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত স্থানের বাহিরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১১. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১২. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৩. সমাবেশের কার্যক্রম ছাড়া মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
১৪. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৫. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে দুপুর দুইটা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৬. কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কের যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭. আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৮. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
১৯.উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২০. কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা, ব্যানার ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।
২১.আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
২২. উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৩. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।