যে ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীকে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠিয়েছিল, সেই বাহিনীরই সশস্ত্র বিদ্রোহের মুখে পড়েছে রাশিয়া। রুশ সামরিক নেতাদের উৎখাতের ঘোষণা দিয়ে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছে ওয়াগনার যোদ্ধারা। খবর বিবিসি ও এনডিটিভির।
ইয়েভজেনি প্রিগোজিন নেতৃত্বাধীন এই বাহিনী এরই মধ্যে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরের সামরিক দফতরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ভরোনেঝ নামে আরেকটি শহরের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা দখল করেছে। এখন রাজধানী মস্কোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারা।
এদিকে ওয়াগনার বাহিনীর এই বিদ্রোহের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ভাড়াটে বাহিনীকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ অভিহিত করে তাদের কঠোর শাস্তি দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
রুশ সামরিক নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে গত মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনের বাখমুত শহর থেকে সেনাদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। এরপর থেকেই রুশ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বাক্যবাণ ছুড়তে থাকেন তিনি।
শুক্রবার (২৩ জুন) অনেকটা আকস্মিকভাবেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রিগোজিন। একাধিক টেলিগ্রাম বার্তায় ৬২ বছর বয়সী প্রিগোজিন বলেন, তার যোদ্ধারা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছে। তবে এটাকে তিনি অভ্যুত্থান বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ওয়াগনার যোদ্ধারা রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন শহরে ঢুকে পড়েছে এবং এর বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা দখলে নিয়েছে। এই এলাকার অধিবাসীদেরকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়া তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু তার সঙ্গে আলোচনায় না বসা পর্যন্ত রাজধানী মস্কোর অভিমুখে অভিযান অব্যাহত রাখবে তার যোদ্ধারা।
রয়টার্স জানিয়েছে, রুশ বাহিনী ও ওয়াগনার বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। মস্কো অভিমুখী ওয়াগনার বাহিনীর বহরের ওপর হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।
শনিবার (২৪ জুন) জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এ সময় তিনি বলেন, রাজধানী মস্কো ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এখন একটি সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা চালু রয়েছে। ওয়াগনার সেনাদের নাম উল্লেখ না করে পুতিন বলেন, রুশদের ‘প্রতারণা ও অপরাধমূলক দুঃসাহসিক কাজে জড়ানো হয়েছে।’
ওয়াগনার বাহিনী ও এর কমান্ডারের তৎপরতাকে ‘পিঠে ছুরি মারা’র শামিল বলে উল্লেখ করে পুতিন বলেন, ‘রাশিয়ার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। কারও কারও উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাদেরকে গভীর রাষ্ট্রদ্রোহিতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে শুক্রবার রাত থেকেই রাশিয়াজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইন্টারনেটের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া মস্কোর রাস্তায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে সামরিক ট্রাক টহল দিতে শুরু করেছে।