ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। প্রায় দেশের সব জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গুরোধে তাই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) প্রশাসন শাখার উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত আদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়। যেসব নির্দেশনা মানতে হবে
১. খেলার মাঠ ও ভবন নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যেসব ফুলের টব রাখা হয়েছে সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে
৪. এডিস মশার প্রজননস্থলে যাতে পানি জমতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে
৫. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকরা ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায় নিয়ে প্রত্যহ শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে
আদেশে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বহু মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন ও হচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ ও ভবনগুলোর মাঝে পানি জমে থাকে এমন জায়গা, ফুলের টবে জমে থাকা পানি এডিস মশার উপযুক্ত প্রজনন কেন্দ্র। তাই ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি শেষে খোলার পর এসব ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে রোববার (৯ জুলাই) থেকে খুলছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি
চলতি বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে মোট ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৮২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭২ জন ঢাকার এবং বাকি ১১০ জন ঢাকার বাইরের।
এ ছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ২ হাজার ১৬৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে এক হাজার ৫২৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৩৭ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ২৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৯৭১ জন। আর ঢাকার বাইরে ৩ হাজার ৩২৭ জন।
এদিকে ভর্তি রোগীদের মধ্যে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৯ হাজার ৬৮ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ৬ হাজার ৩৯২ জন এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ৬৭৬ জন।
গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।