দক্ষিণ আফ্রিকার শহর জোহানেসবার্গে শুরু হয়েছে ব্রিকসের ১৫তম সম্মেলন। সেখানে মুখোমুখি হয়েছেন ব্রিকসভুক্ত পাঁচ দেশের নেতারা। এবারে সম্মেলনে তারা ডলার নির্ভরতা কমানোর ওপরেই সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডেপুটি প্রেসিডেন্ট পল মাশাটাইল জানিয়েছেন, কীভাবে মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরতা কমানো যায় তা নিয়েই প্রথম দিন আলোচনা করবেন ব্রিকস নেতারা।
এদিকে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) ডলার নির্ভরতা কমাতে বড় ধরনের পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকটি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের মুদ্রায় ঋণ প্রদান করবে। এনডিবির বর্তমান প্রধান দিলমা রোসেফ। তিনি ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট। তিনিই নতুন দুই মুদ্রায় ঋণ প্রদানের কথা নিশ্চিত করেছেন। মূলত বহু মেরুর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সিস্টেমকে প্রসারিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দিলমা রোসেফ বলেন, এনডিবি’র টার্গেট হচ্ছে ব্যাংকের প্রদান করা ঋণের মোট ৩০ শতাংশ স্থানীয় মুদ্রায় দেয়া হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের ক্ষেত্রে দেশগুলোর নিজস্ব মুদ্রায় এসব ঋণ প্রদান করা হবে।এনডিবি এরইমধ্যে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে ঋণ প্রদান শুরু করেছে। সামনে ঋণ কার্যক্রমে ভারতীয় রূপিও যুক্ত হতে পারে। ব্রিকস জোটে রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সবগুলো দেশই সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি-রপ্তানিতে ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে। এ নিয়ে পল মাশাটাইল বলেন, আজ বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ব্রিকস সম্মেলন। এই জোট এখন ডলার বাতিলের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা মোটেও পশ্চিমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামছি না। আমরা শুধুমাত্র বৈশ্বিক বাণিজ্যে নিজেদের স্থান বের করে নিচ্ছি। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যে একটি নতুন মুদ্রা চালুর পরিকল্পনাও করছে। যদিও এই পরিকল্পনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়ে গেছে। ব্রিকস দেশগুলোতে বাস করে বিশ্বের ৪০ শতাংশ মানুষ। বিশ্ব অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশই এই জোটভুক্ত দেশের। তাছাড়া এবারের সম্মেলনে নতুন সদস্য রাষ্ট্রের নামও ঘোষিত হতে পারে। ব্লুমবার্গ ভবিষ্যৎবাণী করেছে যে, ২০৪০ সালের মধ্যেই বিশ্বের অর্ধেক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে ব্রিকস। বিশ্বের সবথেকে উন্নত দেশগুলোর জোট জি সেভেনের দ্বিগুণ হবে ব্রিকস জোটের অর্থনীতি।