বাংলাদেশের মুক্তির দূত বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে মার্কিনিরা চায়নি পাকিস্তান থেকেও দেশটি স্বাধীন হোক। উপমহাদেশকে অভিজ্ঞ রাজনীতিক শূন্য করে নিজেদের পররাষ্ট্র নীতি কায়েম করতেই যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পেছনে ইন্ধন দিয়েছে বলে দাবি করেন ভারতের সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত।
কলকাতায় সময় টেলিভিশনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেন ‘মিড নাইট ম্যাসাকার ইন ঢাকা’র লেখক সুখরঞ্জন।
আজ থেকে ৪৮ বছর আগে, একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের নির্মম গুলিতে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের প্রায় সকল সদস্য নিহত হন। যে দেশের জন্য রক্ত ঝরল, লাখো মানুষ শহীদ হলেন, লাখ লাখ নারী সম্ভ্রম হারালেন, সেই দেশের সেনাবাহিনীর একদল সদস্য জাতির পিতাকে এভাবে হত্যা করতে পারেন ? এমন প্রশ্ন আজও মানবসভ্যতাকে দগ্ধ করে; বাঙালি সত্তাকে করে প্রশ্নবিদ্ধ।
সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার আগে ষড়যন্ত্রের জাল তৈরি হয়েছিল ১৯৭১ সালে। পৃথিবীর বুকে লাল-সবুজের পতাকা একদিন বাঙালির গর্বের প্রতীক হবে -সেটা বুঝে গিয়েছিল বিশ্ব মোড়লদের কেউ কেউ। তাই পাকিস্তান ভাগ হয়ে বাংলাদেশের জন্ম হওয়ায়; নিজেদের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার সুফল তুলতে পেছন থেকে পাকপন্থি সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি সেনা ও ক্ষমতালোভীদের “পাপেট” বানিয়ে বঙ্গবন্ধুর বুকে বুলেট বিদ্ধের নকশা হয়।’
সুখরঞ্জন আরও বলেন, ‘আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি। তারা স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। বারবার তারা যুদ্ধ জাহাজ পাঠিয়েছেন। তারাই জিয়ার পরামর্শ দাতা। মার্কিনিরা এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সব বিষয়ে খোঁচা মারছে কেন?’
বর্ষিয়ান এ সাংবাদিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সাহায্য করেছে ভারত। দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পক্ষে বিশ্বের একমাত্র দূত। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার সামনে পশ্চিমা কূটনীতির চাল ধরাশায়ী হয়ে পড়বে। তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের মতো রাজনীতিক থাকলে এ অঞ্চলে মার্কিনিদের প্রভাব বলয় তৈরি চাপের মুখে পড়ত। তাই সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা করেই উপমহাদেশ থেকে দুই রাজনীতিককে সরিয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সাউথ এশিয়া থেকে মুজিব ও ইন্দিরাকে সরিয়ে পুরো ফরেন পলিসি তাদের করায়ত্ত করতে চেয়েছিলো মার্কিনিরা।
তার মতে, বাংলাদেশে অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে বিঘ্ন করতে নানাভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। যে আন্তর্জাতিক শক্তি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, তারাই বাংলাদেশকে এখন অশান্ত করার পরিকল্পনা করছে। সূত্র: সময়