বর্তমানে দেশের বাজারে ৫ কোটিরও বেশি ভারতীয় জাল রুপি ছড়িয়ে আছে; যা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (লালবাগ বিভাগ) উপপুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন।শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
জাফর হোসেন বলেন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী এলাকার সাজ্জাদ হোসেন রবিন নামে এক ব্যক্তি ভারতীয় জাল রুপি তৈরি করে আসছিল- এমন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাতে অভিযান চালানো হয়। ঢাকার লালবাগ থানার আরেনডি রোডের শ্মশানঘাট কালীমন্দির এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিএমপির লালবাগ থানার পুলিশ। পরবর্তীতে এ কাজের মূলহোতা রবিনকে ধরার পর তার দেয়া তথ্যমতে আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিন ২০২০ সাল থেকে এ কাজ করে আসছিলেন।
তিনি বলেন, এ নিয়ে মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে লালবাগ থানা। তারা হলেন, মো. মাহি (১৯), সাজ্জাদ হোসেন রবিন (৩৮) ও সাদমান হোসেন হৃদয় (৩০)।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সংবাদ সম্মেলনে জাফর বলেন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কাজীপুর এলাকার কুদরত উল্লাহ মির্জার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন রবিন। ২০০৭ সাল থেকে জাল রুপি তৈরি করে আসছিলেন। মাঝে কিছুদিন বন্ধ করে আবার ২০২০ সাল থেকে শুরু করেন জাল রুপি তৈরি করা। এসব রুপি দিয়ে তিনি ভারতে চোরাচালান করতেন। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ১ লাখ ভারতীয় জাল রুপি, ১০ লাখ ২০ হাজার জাল টাকা এবং এগুলো তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। চক্রটি এখন পর্যন্ত ৫ কোটির বেশি ভারতীয় জাল রুপি বাজারে ছড়িয়েছে।
তিনি বলেন, চক্রের মূল হোতা সাজ্জাদ হোসেন রবিন একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। ২০০৭ সালে শহীদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি এ ধরনের জাল টাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রবিন তার সঙ্গে জাল টাকা তৈরির কাজ শুরু করেন। শহীদ মারা যাওয়ার পর জাল টাকা তৈরি বন্ধ করে দেন রবিন। এরপর তিনি ব্যবসা শুরু করেন। করোনাকালে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০২০ সাল থেকে রবিন আবারও জাল টাকা, বিশেষ করে জাল রুপি ছাপানোর কাজ শুরু করেন। পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এই জাল রুপি মূলত তারা আমাদের সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালান কাজে ব্যবহার করতেন। শাড়ি, মাদক বা বিভিন্ন সামগ্রী তারা জাল রুপি দিয়ে পরিশোধ করতেন।