বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে চীন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, জোটের বিস্তারের ব্যাপারে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এক্ষেত্রে সমমনা যেকোনো দেশকে ব্রিকস পরিবারে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ব্রিকস সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (২০ জুন) ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগদানের আবেদনের বিষয়ে বেইজিংয়ের অবস্থান প্রকাশ করেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। এদিন আরআইএ নভোস্তির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্রিকসের সম্প্রসারণ একটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রক্রিয়া। পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রই এই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। ব্রিকসের সম্প্রসারণ এগিয়ে নেয়ার জন্য চীন প্রতিশ্রুতিশীল।’
মুখপাত্র মাও নিং আরও বলেন, ‘উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্রিকস বহুপাক্ষিক অবস্থান সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই জোট বিশ্বজুড়ে শাসন ব্যবস্থার সংস্কার জোরালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করছে।’
সোমবার (১৯ জুন) রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে (১৪ জুন) জেনেভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের ব্রিকসে যোগ দেয়ার বিষয়টি উঠে আসে।
বর্তমানে ব্রিকসের সদস্য দেশ পাঁচটি। দেশগুলো যথাক্রমে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে গত দেড় বছরে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ জোটটির সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই র্যাবকভ গত সপ্তাহে জানান, বর্তমানে প্রায় দুই ডজন দেশ জোটে যোগ দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
এ সময় র্যাবকভ আলজেরিয়া, মিশর, সৌদি আরব, ইরান ও আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশের নাম উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি জানান, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া ও নাইজেরিয়াও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গত শুক্রবার (১৬ জুন) ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ব্রিকসের কার্যকারিতা ও কর্তৃত্বের কারণে অনেক দেশই এই ব্লকে যোগ দিতে আগ্রহী।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও বলেছেন, নতুন ব্রিকস সদস্যরা জোটটির বহুমুখী ভিত্তিকে আরও সমৃদ্ধ করবে। তবে তিনি জানিয়েছেন, সদস্য হওয়ার আবেদনগুলো অবশ্যই বিদ্যমান সদস্যদের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই বিবেচনা করা উচিত।
এরপর সোমবার (১৯ জুন) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ব্রিকস জোটে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দোয়া করেন, তারা দাওয়াত দিলে আমরা নিশ্চয়ই জয়েন করব। ফরমাল চিঠি আমরা পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিকসের নেতারা চিন্তা করছেন। তারা সৌদি আরব, বাংলাদেশ, ইইউ, ইন্দোনেশিয়াসহ ৮টি দেশকে নিয়ে ভাবছে। আমাদের দাওয়াত দিয়েছিল, আমি অংশ নিয়েছিলাম।
‘আমরা আরও টাকা-পয়সা চাই বিভিন্ন দিক থেকে। সুতরাং তারা যদি আমাদের সদস্য করেন, আমি মনে করি আমরা সেটি নিয়ে কাজ করব,’ যোগ করেন মন্ত্রী।