ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকু-ুতে মেয়েকে বিদ্যালয়ের সভাপতি বানাতে না পেরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে পিটিয়েছেন সাবেক ইউপি মেম্বার বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই বাবুল হোসেন।
রবিবার (৩ আগস্ট) সকালে উপজেলার দরিবিন্নী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় আক্রান্ত প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন তার সহকর্মী অন্যান্য শিক্ষকরা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিজানুর রহমান বলেন, আমি সকালে স্কুলে যাচ্ছিলাম। রাস্তা থেকে স্কুলের মাঠে প্রবেশ করবো সেই সময় সাবেক মেম্বার আনোয়ার ও তার ভাই বাবুল এসে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আনোয়ার মেম্বারের মেয়ে উর্মি এই বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী ছিল। বিদ্যালয় থেকে ৩বার তার নাম পাঠানো হয়। কিন্তু যেকোন কারণে তার মেয়ে সভাপতি হয়নি, হয়েছে আরেকজন। এই কারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কয়েকদিন থেকে ১ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। আমি না দিতে চাওয়ায় আজ হঠাৎ আমার ওপরে হামলা করে বসে।
বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ ফারুক হোসাইন বলেন, সকালে অফিস কক্ষে বসে ছিলাম। হঠাৎ স্যার দেখি রক্তাক্ত শরীরে আসছেন। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
বিদ্যালয়ের নবগঠিত এডহক কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, গত তিনদিন আগে বিদ্যালয়ের নতুন এডহক কমিটি গঠিত হয়েছে। আনোয়ার মেম্বারের মেয়ে উর্মিকে এই বিদ্যালয়ের সভাপতি বানানোর চেষ্টা করেন আনোয়ার ও তার ভাই বাবুল। তিনবার তার নাম পাঠালেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তা যেকোন কারণে বাতিল হয়। মূলত সেই কারণেই হেডমাস্টারের ওপর তাদের ক্ষোভ। সেই ক্ষোভ থেকেই তার ওপর হামলা চালিয়েছে। হেড মাস্টার আমাকে জানিয়েছিল বাবুল কয়েকদিন ধরে ফোন করে খাওয়া দাওয়া করার জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করে আসছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, এই বাবুলের বিরুদ্ধে এলাকায় অনেক অভিযোগ। বিএনপির রাজনীতি করায় বিভিন্ন শালিস দরবারের নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অনেক অভিযোগ আছে।
এবিষয়ে আনোয়ার হোসেন মেম্বাররের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হেড মাস্টার ভালো লোক নয়। সমিতির কিস্তির জন্য আমার কাছ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে ২ লাখ টাকা নিয়েছে। সেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। আজকে সেই টাকা ফেরত চাওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়ে আমার ভাই বাবুলের সাথে হেড মাস্টারের ঝামেলা হয়েছে। আমি মারামারিতে ছিলাম না পরে শুনেছি ।
হরিণাকু-ু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, কিছুক্ষণ আগে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।