মোঃ শাহানুর আলম, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মাঠে উর্বর মাটি । এ মাটিতে যে ফসলই রোপণ করা হোকনা কেনো তার সর্বোচ্চ ফলন পান কৃষক। তাইতো শীতকালে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম বাঁধাকপির বাম্পার ফলনের আশায় প্রহর গুনছেন কৃষকরা। অধিক ফলন ও লাভের আশায় দিনরাত ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রতনপুর গ্রামের মাঠে কৃষকরা বাঁধাকপি ক্ষেত নিড়ানি ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে কৃষকরা টপিকসান প্লাস ও অটোম কুইন জাতের বাঁধাকপি চাষ করছেন। এদিকে চাষিরা বলছেন, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি, জমি চাষ, বীজ, সার, সেচ, শ্রমিক খরচসহ এবার প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। তবে চারা রোপনের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ দিনেই বাঁধাকপি বাজারজাত করা যায়। প্রতি পিস বাঁধাকপি ১৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন প্রকার শীতকালীন সবজির দাম বেশি হওয়াই বাঁধাকপির কদর বেড়েছে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিক্রি করতেও বেগ পোহাতে হচ্ছেনা চাষিদের। পাইকারী দামে জমি থেকেই এসব সবজি ক্রয় করে তা স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করছেন।
সদর উপজেলার রতনপুর গ্রামের চাষি কামাল হোসেন বলেন, আগাম বাঁধাকপি চাষ লাভজনক হওয়ায় তিনি দুই বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেরীতে হলেও অল্প দিনের মধ্যেই বাজারে বাঁধাকপি তুলতে পারবেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়।
গোলজার হোসেন নামের একজন সফল চাষী বলেন, অধিক ফলন ও লাভের আশায় তিনি প্রতি বছরই জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাঁধাকপি চাষে ঝুঁকেছেন। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার কীটনাশকের ডোজ দ্বিগুণ দিতে হয়েছে বলে জানান।
সবজি চাষী নয়ন মিয়া বলেন, শীতকালীন আবাদ আগাম চাষে বাজারে চাহিদা বেশী থাকায় দাম বেশি পাওয়া যায়। যে কারণে স্বল্প সময়ে সীমিত খরচে অধিক মুনাফা লাভের আশায় তিনি এবার ৪৫ শতক জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছেন। তবে এ বছর অত্যাধিক বৃষ্টিপাতের কারণে খরচের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়।
এ ব্যপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর-এ-নবী বলেন, বাঁধাকপি একটি উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি হওয়ায় কৃষকেরা আগাম চাষাবাদে ঝুঁকেছেন। এতে তারা হয়ত ভালো লাভবান হবেন। তাছাড়া কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণে সার্বক্ষণিক ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি কীটনাশকের দাম বৃদ্ধির বিবেচনায় কৃষকদের জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের জন্য পরামর্শ ও দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও তিনি ক্ষতিকর পোকামাকড়দের আক্রমণ রোধে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করেন।