মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র এক এজেন্টকে পাকড়াও করেছে চীনের গোয়েন্দারা। ওই এজেন্ট চীনেরই একটি সামরিক কোম্পানিকে কাজ করছিলেন। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চীনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য সরবরাহ করতেন তিনি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যেকার উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।সিএনএন জানিয়েছে, শুক্রবার এক বিবৃতিতে চীনের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় নতুন এই সিআইএ এজেন্টকে আটকের কথা জানায়। তার পুরো নাম না বললেও নামের একটি অংশ প্রকাশ করে চীন। বলা হয়, জেং নামের ওই সিআইএ এজেন্টের বয়স ৫২ বছর। তিনি চীনের একটি সামরিক কোম্পানির উচ্চপদে কাজ করতেন, যেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ গোপন সামরিক তথ্য সংগ্রহ করা সহজ ছিল। চীন জানিয়েছে, জেংকে কোম্পানির তরফ থেকে ইতালি পাঠানো হয়েছিল। আর সেখানেই মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মী তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর ধাপে ধাপে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্ট করে তোলা হয়। প্রায়ই তাকে বিভিন্ন ডিনার পার্টি, অনুষ্ঠান এবং বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতেন ওই মার্কিন কর্মকর্তা।সম্পর্ক ঘনিষ্ট হওয়ার পর এক পর্যায়ে তিনি জেংকে জানান যে তিনি আসলে সিআইএ অফিসার।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য পাচারের বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করেন জেং। পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যরা যাতে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পান, সে শর্তও জুড়ে দেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিনি একটি লিখিত চুক্তি করেন এবং এরপর তাকে বিশেষ গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
দেশে ফিরে জেং চীনে সক্রিয় অন্য সিআইএ এজেন্টদের সঙ্গেও দেখা করেন। একাধিকবার তিনি সিআইএ’র কাছে চীনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করেছেন। সব তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জেংয়ের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বেইজিং। এদিকে গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে দুই মার্কিন নৌ বাহিনী সদস্যকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্র। তারা চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তথ্য বিক্রি করেছিল। এরপরই চীনে সিআইএ এজেন্ট গ্রেপ্তারের ঘটনাটি ঘটলো।
ইতিহাসজুড়ে সবসময়ই চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালু রেখেছে। তবে ২০১০ সালে বড় ধাক্কা খেয়েছিল সিআইএ। ওই বছর থেকে চীন মার্কিন গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে রীতিমতো জিহাদ ঘোষণা করেছিল। মাত্র দুই বছরে সিআইএর এক ডজনেরও বেশি এজেন্টকে হত্যা ও গ্রেপ্তার করে চীন সরকার।