এন এস বি ডেস্ক: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতোই দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদের পাশাপাশি স্টেট কাউন্সিলর পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।সম্প্রতি চীনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ‘নিখোঁজ’ হন। বেশ কিছু দিন পর জানা যায়, তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর গত মাসে ঠিক একইভাবে ‘নিখোঁজ’ হন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল লি শাংফু। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তাকে কোথাও প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।অবশেষ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি মারফত জানা গেল, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো প্রতিরক্ষামন্ত্রীকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এই পদে এখনও নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ কার্যত শুন্যই রয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদের পাশাপাশ স্টেট কাউন্সিলের পদ থেকেও লি শাংফুকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত জুলাই মাসে বরখাস্ত হওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকেও স্টেট কাউন্সিলর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। চীনের ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটি এই দুই শীর্ষ নেতার বরখাস্তের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। মূলত সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকারে একটা বড় রদবদল করা হয়। তারই অংশ হিসেবে বাদ পড়েন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু। কিন্তু বিষয়টি সরকারের পক্ষ রহস্যজনকভাবে গোপন রাখা হয়। সেই সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের প্রকাশ্যে দেখা না যাওয়ায় তারা ‘নিখোঁজ’ বলে গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়।
বিষয়টি বিদেশি কূটনীতিক মহলেও নানা আলোচনা ও গুঞ্জন দেখা দেয়। যেমন গত মাসের মাঝামাঝি জাপানে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিক রাহ ইমানুয়েল এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। নিজের ‘এক্স’ হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) এই মার্কিন কূটনীতিক লেখেন, প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং নিখোঁজ হলেন। এরপর রকেট ফোর্স কমান্ডাররাও নিখোঁজ। আর এখন দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না।’ জাপানে নিযুক্ত মার্কিন দূত আরও বলেন, কে জিতবে এই বেকারত্বের দৌড়ে? চীনের তারুণ্য নাকি শি’র মন্ত্রিসভা মিসটারিইনবেইজিংবিল্ডিং’। খবরে বলা হয়, গত ২৯ আগস্ট জেনারেল লিকে শেষবার প্রকাশ্যে দেখা যায়। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় চীন-আফ্রিকা শান্তি ও নিরাপত্তা ফোরামে বক্তব্য দেন তিনি। ওই মাসেই প্রতিবেদনে উঠে আসে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার সরকারে বড় ধরনের রদবদল আনেন। দুই রকেট ফোর্স জেনারেলকে সরিয়ে দেন। তারা হলেন পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রকেট ফোর্স ইউনিটের প্রধান লি ইউচাও ও তার ডেপুটি লিউ গুয়াংবিন। তারা দেশটির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা তদারকের দায়িত্বে ছিলেন। তাদেরও কয়েক মাস ধরে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না। রকেট ফোর্সে নতুন জেনারেল নিয়োগের এক সপ্তাহ পর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এই রদবদল আনা হয়েছে।