এস এম এ রউফ,কয়রা (খুলনা): খুলনার কয়রা উপজেলায় অবস্থিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের ৫১ জন কর্মচারী একযোগে গণছুটিতে যাওয়ায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে বিদ্যুৎ বিপর্যয়, জরুরি মেরামত কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই আকস্মিক কর্মবিরতির কারণে স্থানীয় গ্রাহক ও জনপ্রতিনিধিরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, কর্মচারীরা তাদের দীর্ঘদিনের কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে গত ৭ই আগস্ট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে গ্রাহক সেবার কথা বিবেচনা করে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না আসায় তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ধাপে ধাপে মোট ৫১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছুটির আবেদন জমা দিয়ে অফিস ত্যাগ করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, বিদ্যুৎ একটি জরুরি পরিষেবা। এমন একটি সংস্থার কর্মীদের গণছুটিতে চলে যাওয়া একেবারেই অযৌক্তিক ও দায়িত্বহীন কাজ। এতে করে এলাকায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তা সামাল দেওয়ার মতো কোনো জনবল থাকবে না। বিদ্যুতের অভাবে ব্যাহত হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজ এবং হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবা। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনবল নিশ্চিত করে সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
কয়রা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোঃ নওশের আলী বলেন, “এই মুহূর্তে ৫১ জন কর্মচারী একযোগে ছুটিতে চলে যাওয়ায় বিদ্যুৎ পরিচালনা নিয়ে আমরা খুবই শঙ্কিত। যদি কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটে বা জরুরি মেরামত প্রয়োজন হয়, তাহলে কাজ করার মতো কোনো জনবল আমাদের হাতে নেই। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক এবং সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তির শিকার না হয়।”
এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে কয়রা উপজেলার হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক যেকোনো মুহূর্তে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শিকার হতে পারেন। এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে সেচ কার্যক্রমে যেমন বিঘ্ন ঘটবে, তেমনি শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস, ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।